শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:১১

শিরোনাম :
রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল দুই উৎসবের ছুটি শেষে বরিশাল থেকে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ ঈদ আনন্দ থাকতেই বরিশালে বইছে পহেলা বৈশাখের আনন্দ
বরিশাল শহরকে একটি সুন্দর শহরে রুপান্তরিত করতে চাই- প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক

বরিশাল শহরকে একটি সুন্দর শহরে রুপান্তরিত করতে চাই- প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম-এমপি বলেছেন, আমি জনগনের সেবা করতে এসেছি, আমার উদ্দেশ্য সেবা করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন। দক্ষিনাঞ্চলে বেশি নদী ভাঙ্গন হয়, আর আমি এ অঞ্চলের মানুষ আমি, এজন্য হয়তো তিনি আমাকে প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন। আমার উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার, আমি চাই বরিশাল বিভাগ বিশেষ করে বরিশাল শহর,বরিশাল সদর উপজেলাকে সুখী, সমৃদ্ধ একটি শহর হিসেবে রুপান্তর করতে।শুক্রবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরীফ মোঃ আনিছুর রহমান (আনিছ শরীফ)এর উদ্যোগে নগরীর দক্ষিন রুপাতলীস্থ খান সড়কে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বরেন।সভা সমাবেশ শেষে প্রতিমন্ত্রী নদী ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাঙ্গন কবলিন এলাকা পরিদর্শন করেন।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আমি যখন নির্বাচন করি, তখন আমি অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। আপনারা জানেন বিভিন্ন কারণে সেই সপ্ন আমি বাস্তবায়ন করতে পারিনি, আমার চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা চাই বরিশাল শহরকে একটি সুন্দর শহরে রুপান্তরিত করতে। যাতে শহরের যুব সমাজ, নতুন প্রজন্ম শান্তিতে নির্বিঘ্নে লেখাপড়া করতে পারে, বড় হতে পারে মানুষ হতে পারে এবং বরিশালের জন্য সুনাম অর্জন করতে পারে।তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার যে সপ্ন দেখেছিলেন। যা বাস্তবায়নে তার কন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখনই সরকার গঠন করে তখনই দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়ন হয়। কারন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ। তিনি আসার পরেই আমাদের এখানে পায়রা বন্দর হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। পায়রা বন্দর পর্যন্ত চারলেনের রাস্তা হবে, রেললাইন আসবে। আগে একটা সময় ছিলো যখন বলতো কোন জেলায় রেললাইন নাই? উত্তরে বলতো-বরিশাল জেলায় রেললাইন নাই। কিন্তু আগামী ২/১ বছরের মধ্যে সেই কথাটা বইতে লেখা থাকবে না।

কারণ বরিশাল জেলায়ও রেললাইন চলে আসবে, যার কাজ দ্রুতগতি এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু করছেন।পদ্মাসেতু নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে আমাদের বিরোধী দলে যারা রয়েছন তারা অনেক কথা বলেছেন। পদ্মা সেতুতে দুর্নিতী হয়েছে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকা দিতে সিদ্ধান্ত নেয়নি, তারা টাকা দিয়ে নিয়ে গেছে এরকম কত কিছু। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রমান করে দিয়েছেন বাংলাদেশের টাকা দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মান করা সম্ভব।

আজ পদ্মা সেতু হলে পরে ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত কোন ফেরি ছাড়াই যেতে পারবো। কয়েকদিন আগে পায়রা নদীর ওপর সেতুর উদ্বোধন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছেন। যারফলে বরিশাল থেকে পায়রা ও কুয়াকাটায় যেতে এখন আর ফেরি পার হতে হবে না।ফেরি না থাকায় দেড় থেকে দুই ঘন্টার মধ্যে এখন আমরা পায়রা বন্দরে যেতে পারছি।তিনি বলেন, সকলের সহযোগীতায় বরিশালকে অনেক সুন্দর একটি শহর বানানোর সপ্ন আমার রয়েছে। কারণ পায়রা বন্দর হওয়ার কারনে বিদেশী অনেক লোক এ অঞ্চলে ব্যবসা-বানিজ্য করবে। বরিশাল বিভাগীয় শহর হওয়ায় এখানে অনেক অফিস হবে, শিল্প কারখানা হবে। আমাদের যুব সমাজরা চাকুরি পাবে, মা-বোনেরা চাকুরি পাবে। তবে এসব চাকুরির জন্য আপনাদের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।এজন্য আপনাদের নিজেদের প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে। অভিভাবকদের খেয়াল করতে হবে তাদের সন্তানরা যেন সবসময় লেখাপড়া করে।আমি আমাদের কর্মীদের লেখাপড়া করার জন্য বলি। কারণ যতই নেতার পেছনে ঘুরুক না কেন, লেখাপড়া না করলে চাকুরি দেয়া সম্ভব হয়না। নিজেদের যোগ্যতা সম্পন্ন করতে পারলে, আমরাও আপনাদের বিভিন্ন জায়গায় চাকুরি দিতে পারবো।

তিনি বলেন, বরিশাল শহরে মাদকের প্রভাব রয়েছে, অনেকে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতও আছে। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ আপনাদের সন্তানদের, ছোট ভাইদের সামলে রাখবেন, কেউ যদি একবার মাদকে আসক্তি হয়ে যায় তাহলে সে আর ভালো হতে পারবে না। একটা পরিবারে যদি কেউ মাদকাসক্ত থাকে তাহলে সেই পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। সে যত বড়লোকই হোক না কেন, সে ঘরে শান্তি ফিরে আসে না। কিছু কিছু লোক রয়েছেন যারা মাদকের সাথে জড়িত। তারাই এসে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে। আপনারা ভালোভাবে যানেন এরা কারা, এদের চিহ্ণিত করতে হবে এবং এদেরকে সবসময় আপনারা না বলবেন। এদের সাথে থাকা যাবে না।দেশের উন্নয়নে সকলে মিলে একত্রে কাজ করতে হবে, ঝগড়া-বিভেদ করে লাভ নেই। আমরা সবাই মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যে পৌছাতে পারবো, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারবো।তিনি বলেন, বরিশাল-৫ আসনের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন এবং সদর উপজেলা আমার নির্বাচনী এলাকা। কিন্তু এখানে যেহেতু নির্বাচিত একজন মেয়র রয়েছেন, তাই আমি শহরের দিকে বেশি নজর দিতাম না এবং অতীতে কখনো দেই নাই। তারপর দেখলাম বিভিন্ন কাউন্সিলর বিশেষ করে আজ যে দশজন কাউন্সিলর আমার সাথে এসেছেন তাদের কমপ্লেন- বিগত তিন বছরে ওয়ার্ডে কাজ করার কোন সাহায্য তারা পায়নাই। এজন্য তারা বাধ্য হয়ে আমার সাথে এসেছে। আমি এবং সিটি করপোরেশন এক। মেয়র সাহেব এবং আমাকে আপনারাই নির্বাচিত করেছেন। আমার ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্খা আমরা মিলেমিশে বরিশালকে সুন্দর শহর বানাবো।

কিন্তু কেউ যদি নিজের ভাগ্যই পরিবর্তন করতে চায়, জনগনের ভাগ্য যদি পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা না করে, কেউ যদি শুধু তার নিজের কয়েকজন নেতা-কর্মীর ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায়, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে না চায় তাহলে আমার কিছু বলার নাই। আপনারা জানেন, বিগত আড়াই বছরে বরিশাল শহরে কোন উন্নয়ন হয়নি,প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন যখন সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলো তখন বরিশালের যতো উন্নয়ন হয়েছে, তারপর কেউ করেনি।তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আবেদন জানাবো যে, আসুন আপনারা সব ভুল ভূলে যান। আপনারা প্রস্তুতি নেন আগামী নির্বাচনের সময় যাতে করে ভালো একজন নগর পিতা বানাতে পারেন। আপনারা ভালো একজন সংসদ সদস্য বানাতে পারেন। যে ভালো তাকেই আপনারা সাপোর্ট দিবেন। আমি খারাপ হই আমাকে সাপোর্ট দিবেন না, আমি যদি ভালো হই সৎ হই আমাকে সাপোর্ট দিবেন। মেয়র সাহেব যদি ভালো হন তাকে সাপোর্ট দিবেন, সে যদি ভালো কাজ না করে তাকে সাপোর্ট দিবেন না। আমার কথা হলো আপনারা ভালো লোককে নির্বাচিত করেন বরিশাল শহরের উন্নয়ন হবে, আপনারা যদি খারাপ লোককে সাপোর্ট করেন বরিশালের উন্নয়ন কখনো হবে না।

সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আনিস শরীফের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আনিস শরীফ আমাকে নদী ভাঙ্গনের কথা বলেছেন। আমি পুরো এলাকা পরিদর্শন করবো। তবে এরআগে বর্ষা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়ে আমি কালিজিরা পর্যন্ত গোটা এলাকা স্পীড বোট নিয়ে ঘুরে দেখেছি। আমাদের একটা প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে। নির্বাচনের আগেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ইনশ্আল্লাহ।তবে আপনাদের বুঝতে হবে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের কাজ শুরু হতে একটু সময় লাগে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নদীর চারিত্রিক বৈশিষ্টের পরিবর্তন ঘটে। আমাদের কারিগরি কমিটি এসে বিচার-বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় এখানে কি ধরনের কাজ করা প্রয়োজন। যাতে প্রকল্পটি সঠিকভাবে হয়। আমাদের চরবাড়িয়াতে একটা প্রকল্প চলমান রয়েছে। চরকাউয়া, চরমোনাই, কালিজিরা এলাকা নিয়ে আমাদের আর একটি নতুন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যার কাজ আগামী একবছরের মধ্যে শুরু করবো।তবে একবছরের মধ্যে যাতে ভাঙ্গন না হয় সেজন্য এখন পানি কমে আসার সময় কাজ করে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখবো।

 

তিনি বলেন, রাস্তাঘাট ঠিক করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের মেয়রের। তিনি যদি আপনাদের দুঃখ, দুর্দশা,কষ্ট উনি যদি না বোঝেন, তাহলে আমি কিছু করতে পারবো না। আমি আজও আহবান জানাবো আসুন একসাথে কাজ করি। তিনি বলেন, আমি জানি বরিশাল শহরে বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা হয়।যেহেতু সিটি করপোরেশন প্রকল্প নিতে বিলম্ব করছে, তাই আমি একটি প্রকল্প নিয়েছি। বরিশাল শহরের রুপাতলী খাল, জেল খাল, চৌমাথা খাল, কাউনিয়া খাল এরকম সাতটি খালের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ খালগুলো খনন করা হলে পরে যে জলাবদ্ধতা হয় তা কমে আসবে। একদম কমাতে পারবো না, কারণ বিএনপির সময় যে কাজগুলো করা হয়েছিলো-যেমন নবগ্রাম রোডের খাল ভড়াট করে রাস্তা করা হয়েছিলো এ কারনে এখন রাস্তার ওপর পানি জমছে।

 

তিনি বলেন, আমি পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী, আমি ইচ্ছে করলে হাজার হাজার কোটি টাকা বানাতে পারি। কিন্তু কেউ বলুক আমি এখান থেকে একটাকা বানাইছি, টিআর-কাবিখার থেকে একটা পয়সা নিয়েছি। কেউ বলুক এতো টিউবয়েল দিয়েছি, সেখান থেকে একটা টাকা নিয়েছি। আমি হারাম খাওয়া বিশ্বাস করিনা। যারা জনগনের, দুঃখ, দুর্দশা, কষ্ট বোঝে সেইসব লোককেই আপনারা নেতা বানাবেন। তাহলেই বাংলাদেশে উন্নয়ন হবে।সভার সঞ্চালন করেন ২৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ হাওলাদার।সে-সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি’র পরিচালক আলমগীর খান আলো, মহানগর আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আমিন উদ্দিন মোহন,মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন, ১,৪,১২,২০,২৩,২৬,২৮,২৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মধু, ২৪নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম,২৪নং ওয়ার্ড মহিলা লীগের নেত্রী শাহনাজ পারভীন, মহানগর যুবলীগের সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন,মহানগর যুবলীগের সদস্য মানিক, মহানগর যুবলীগের নেতা আতিকসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net