স্বপন কুমার ঢালী, বেতাগী ॥ গেট সাজানো। লাল নীল বাতি জ্বলছে। বাড়ির কেহ কেহ ব্যস্ত অতিথিদের আপ্যায়ন নিয়ে। হিন্দি গান বাজিয়ে ধুম-ধাম সহকারে নৃত্যেও চলছে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছে।
সাতপাকে বাধাঁর পূর্ব মূহুর্ত। বিয়ে বাড়ির আনন্দঘন পরিবেশ। সনাতনীদের পঞ্জিকা মতে বিয়ের নির্ধারিত লগ্নের বাকি মাত্র কয়েক মিনিট। ঠিক ওই সময়টায় সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। বর ছুটে পালালো। সবাই ব্যস্ত যার যার মতো করে পালাতে শুরু করছে।
এ গল্পের বাস্তব রহস্যে হলো, বরগুনার বেতাগীতে সাংবাদিকদের তৎপরতায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠী গ্রামে রায় বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দেশান্তরকাঠী গ্রামের বাসিন্দা সুনীল রায়ের ছোট মেয়ে ববিতা রায় ফুলতলা বিকাশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে থেকে সপ্তম শ্রেণিতে অটো পাশ করেছে। বয়স ১৩ বছর।
হিন্দুধর্মের বিয়ের লগ্ন রাত ৯ টা ৪৫ মিনিট থেকে রাত ১০ টা ১০ মিনিটের মধ্যে। উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের এক ছেলের সাথে ববিতা রায়ের পরিবার বিয়ের আয়োজন করেছে।
বিয়ে করানোর সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। ছেলে পক্ষ এসেছে। ছেলেও বসেছে বিয়ের পিঁড়িতে এবং বিয়ে সম্পন্ন করানোর পুরোহিতও বসেছেন। বাকি শুধু বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ও সাতপাক প্রদক্ষিন করা অর্থাৎ বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে।
ঠিক এমনই সময় রাত সাড়ে ৯ টায় খবর পেয়ে সাংবাদিক লায়ন শামীম সিকদার, অলি আহমেদ ও আনসার ভিডিপি দলনেতা বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত। মুহূর্তের মধ্যে বিয়ে বাড়ির লাল নীল বাতি বন্ধ হয়ে গেল। শুরু হয় ছেলে পক্ষ আর মেয়ে পক্ষের ছুটোছুটি। ছেলে পক্ষ বরের সাথে যারা এসেছিলেন, এরই মধ্যে সবাই পালিয়ে গেলেন।
কনে ববিতা রায়ের বড় বোন নাম না প্রকাশের শর্তে স্বীকার করেছেন, ‘বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। মেয়ের বাবা সুনীল রায় বলেন,‘ এই মুহূর্তে আর বিয়ে দিবো না। এখন পড়ালেখা করবে, তারপর বয়স হলে বিয়ে দেওয়া হবে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন,‘ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন সদা তৎপর। অপ্্রাপ্ত বয়সে কোথাও কোনো বিয়ের সংবাদ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply