বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১০:০১

টাকা কম দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীর সহযোগী বানিয়ে কোতোয়ালি পুলিশের মামলা

টাকা কম দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীর সহযোগী বানিয়ে কোতোয়ালি পুলিশের মামলা

dynamic-sidebar

অনলাইন ডেস্কঃ ঢাকা জেলার ডিবি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে গ্রেফতারি ওয়ারেন্টের কথা বলে রহিম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি। অতঃপর দাবিকৃত টাকা কম দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীর সহযোগী বানিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠেছে ডিএমপির কোতোয়ালি পুলিশের বিরুদ্ধে। গত ১২ অক্টোবর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে রহিম তার নিজ বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকার চুনকুটিয়া ব্রিজে পৌঁছালে সাদা পোশাকে ৩ জন লোক ঢাকা জেলার ডিবি পুলিশ পরিচয়ে রহিমকে আটক করে। এরপর তাকে ব্রিজের পশ্চিম পাশে মা ভ্যারাইটিস নামের একটি মুরগির দোকানের ভিতর নিয়ে দেহ তল্লাশি করে।

 

 

এসময় রহিমের কাছে কিছু না পেয়েও তাকে আটক করে নিতে বাধা দেয় মুরগির দোকানে থাকা বাবুল ও বিল্লাল। এতে পুলিশ তাদেরকেও হুমকি-ধামকি দিয়ে রহিমকে তাদের ডিউটিরত সিএনজিতে তুলে শুভাড্যা ইউনিয়ন এলাকার আর্মি ক্যাম্প এলাকা পার হয়ে বাবু বাজার ব্রিজের পাশে ট্রাফিক বক্সের সামনে সিএনজি থামিয়ে তারা রহিমকে ডিএমপির কোতোয়ালি থানাপুলিশ পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে একজন পুলিশের সোর্স দেলোয়ার, এসআই আনিসুল ইসলাম ও এএসআই খাইরুল ইসলাম। পরিচয় শেষে তাদের তিনজনের পকেট থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট ভর্তি ৬টি প্লাস্টিকের প্যাকেট বের করে রহিমের হাতে দেয় পুলিশ এবং তারা বলেন, এগুলো রহিমের কাছে পাওয়া গেছে। বাঁচতে চাইলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দুই লাখ টাকা দিতে হবে বলেও জানায় পুলিশ।

 

 

নিরুপায় হয়ে রহিম তার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেন ও ১৩ হাজার টাকা এসআই আনিসুল ও এএসআই খায়রুলকে প্রদান করে। পুলিশের দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে দেরি হওয়ায় রহিমকে কিছুক্ষণ পর নিয়ে যাওয়া হয় কোতোয়ালি থানায়। বিষয়টি জানতে পেরে রহিমের পরিবার ধার-দেনা করে নগদ ৫০ হাজার টাকা পুলিশকে প্রদান করে।

 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রহিম জানায়, ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার পর রাতেই থানার ওসি (অফিসার ইনচার্জ) ডেকে নিয়ে তাকে জানায় এবারের মতো বাঁচিয়ে দিলো, ছোট একটি মামলা দেওয়া হয়েছে দুই-একদিনের মধ্যেই ছাড়া পাবে সে। পরবর্তীতে রহিম জানতে পারেন, দাবিকৃত টাকা না দিতে পারায় তাকে থানায় গ্রেফতার হওয়া এক মাদক ব্যবসায়ীর সহযোগী বানিয়ে আদালতে প্রেরণ করে কোতোয়ালি থানাপুলিশ। এদিকে পুলিশের এজাহারে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রহিমকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
অনুসন্ধান বলছে, ১২ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে রহিমকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া ব্রিজ থেকে গ্রেফতার করে সোয়া ৯টার দিকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয় তাকে।

 

তবে পুলিশ তাদের এজাহারে উল্লেখ করেছেন, কোতোয়ালি থানা এলাকার বিআইডাব্লিউটিসির মার্কেট বাদামতলি স্টিমার ঘাট মেসার্স নুর জাহান রাইস এজেন্সির সামনের রাস্তার ওপর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর রহিমকে গ্রেফতারের সময় দেখানো হয়েছে রাত সোয়া ১০টায়। এজাহারে গ্রেফতারে উল্লেখিত সময়ের ১ ঘণ্টা আগেই রহিম ছিল থানাহাজতে। এসকল দৃশ্যই ধারণ রয়েছে বেশকিছু সিসি ক্যামেরায়।

 

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার এএসআই খায়রুল ইসলাম বাংলাদেশের আলোকে জানান, তিনি থানায় নতুন এসেছেন। এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। তবে অফিসারের সঙ্গে আলাপ করে কথা বলতে পারবেন।
মুঠোফোনে এসআই আনিসুলকে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net