রিপন হাওলাদার/খান সাঈদ ॥ জয়নব বিবি (৮০) পিতাঃ হুজুর আলী গ্রাম চরকুকরি মুকরি এলাকায়। পাকিস্তান আমলেই ভাঙ্গনে ভেঙ্গে যায় বসত ঘরটি।
তখন এসে নতুন ভাবে বসবাস করেন ভোলার চরফ্যাশনে। গ্রামের নামী পুরোপুরি মনে নেই তার। ৩০ বছর বয়সে বিয়ে হয় জয়নব বিবি’র। জয়নব বিবি’র স্বামীর নাম সাদ্দাদ হোসেন।
স্বামী একই এলাকায় বেশি একটা মনে নেই তার। যেই খানে বসবাস করেন সেই ঘরটিও ভেঙ্গে যায় নদীর ভয়াল গ্রাসে। সেই সাথে ভেসে যায় জয়নবের মা আখি। মায়ের পুরোনামটি মনে নেই তার।
বাবার নামটি মনে আছে তার। মা নদীতে ভেসে যাওয়ার সময় স্মৃতি হারিয়ে ফেলে জয়নব। স্বামীর সংসারে একটি ছেলে একটি মেয়ে জম্ম নেয়। মেয়ে বড় আর ছেলেটি ছোট তার নাম আল-আমিন।
কিন্তু মেয়ের পুরো নামটি মনে নেই তার। তবে শশুরের নাম ওসমান কিন্তু গ্রামের নামটি মনে নেই তার। গত ৩০ বছর পূর্বে অন্তসত্ত্বা অবস্থায়ই পাগল হয়ে বাড়ি ছেড়েছেন জয়নব বিবি।
এর পরে বিধির বিধান মতে এসেই ঠাই হয় বরিশালের জেলা পরিষদ পুকুর পারে। পরে তার গর্ভে জম্মনেয় আল-আমিন নামের ছেলেটি। ছেলেটিকে নিয়ে ভিক্ষা করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন জয়নব।
একটি হাড়ি পাতিল ক্রয় করে মা/ছেলে রান্না করেই দিন জাপন করতেন জয়নব বিবি। গত ৫/৭ বছর পূর্বে জয়নব বিবির স্থান হয় বরিশালের লঞ্চঘাট এলাকায়। পাটের বস্তা আর কোন মতে পুরাতন কাপড় দিয়েই চলতো মা ছেলের জীবন। গত দেড় বছর পূর্বে ছেলেটি চলে গেছে গ্রামের বাড়িতে।
মা জয়নব বিবি পরে আছে বরিশাল লঞ্চঘাটে। হঠাৎ অসুস্থ্য হয় পরে জয়নব বিবি। অসুস্থ্য হয়ে হাটা চলা বন্ধ হয়ে যায় তার। ঘুমিয়ে থাকতেন একতলা লঞ্চঘাট এলাকায়। দেশের এই মহামারীর সময় হঠাৎ জয়নব বিবি’র দিকে নজর আসে বরিশালে সাংবাদিকদের সংগঠন উদ্যোগের।
চলমান লকডাউনের কারনে বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চচলাচল। অসহায় হয়ে পরে বরিশাল লঞ্চঘাটের পথ শিশুরা। তাদের খাবারের উদ্যােগ নেয় সাংবাদিকদের সংগঠন ”উদ্যোগ”।
টানা ৭০ দিন খাবার বিতরন করা হয়। এসময় উদ্যােগের সিনিয়র সাংবাদিক শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের দৃষ্টিতে আসে জয়নব বিবি। তিনি তার থাকার জয়গাটিকে ত্রিপল দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেন।
বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এবং ঠান্ডা লাগে জয়নব বিবি’র। এসময় প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং ঔষধ পত্রের ব্যবস্থা করে দেন। লঞ্চচলাচল শুরু হওয়ায় সাময়িক সময়ের জন্য খাবার স্থাগিত করেন সাংবাদিকদের সংগঠন উদ্যােগ।
কিন্তু তারপরেও জয়নব বিবি’র খাবারের দায়িত্ব নেন সাংবাদিকদের সংগঠন উদ্যােগ।
এপর্যন্ত ১৫ দিন যাবৎ ২ বেলা খাবার চালিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকদের সংগঠন উদ্যােগ। খাবার দেয়ার সময় কথা হয় জয়নব বিবির সাথে এসময় তিনি তার জীবনের কিছু কথা তুলে ধরেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply