শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:১৭

পিরোজপুরে দুই ওসিকে দায়ী করে থানার ঝাড়ুদারের বিষপানে ‌আত্মহত্যা

পিরোজপুরে দুই ওসিকে দায়ী করে থানার ঝাড়ুদারের বিষপানে ‌আত্মহত্যা

dynamic-sidebar

খবর বরিশাল ডেস্ক ॥ পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে চুরির অপবাদ দিয়ে লাঞ্ছিতের অভিযোগে চিরকুটে দুই ওসিকে দায়ী করে আল মামুন (৪০) নামে একজন বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। নিহতের পরিবারের দাবি, সদর থানা ও ইন্দুরকানী থানার ওসি মামুনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন।সোমবার (৫ জুন) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।মামুন বরিশালের মোড়েলগঞ্জের বৌলপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। সে ইন্দুরকানীতে বসবাস করত। ১০ বছর আগে ইন্দুরকানী থানায় ঝাড়ুদারের চাকরি শুরু করেন।

চিরকুটে মামুন লিখেছেন,‘‌‌আমি নির্দোষ। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি মারা যাওয়ার পর আমার লাশ পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) করবেন না। লাশটা আমার মামার বাড়ি দাফন করবেন।’

মামুনের স্ত্রী মরিয়ম বেগমের দাবি, ইন্দুরকানী থানার এএসআই শাহাদাত আমাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে এক বার। সম্প্রতি তাকে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই অভিযোগ ওসি এনামুল হকের কাছে দেওয়ার পর থেকেই মামুনকে বিভিন্নভাবে ফাঁসাতে থাকে ওসি। তাকে মানষিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হতো। পিরোজপুরে বদলি হওয়ার পর বর্তমান ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেকে ইন্দুরকানীর ওসি মামুনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বলে। তাই তিনিও মামুনকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন।

রোববার বিকালে বাড়িতে ফেরার পর মামুনকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। এরপর তাকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করার পর মামুন জানায়, মসজিদ থেকে একটি জায়নামাজ চুরির অভিযোগে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন তাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

সোমবার সকালে আগাছা নিধনের ওষুধ কিনে তা পান করে মামুন। এরপর বাড়িতে এসে স্ত্রীকে জানালে, তাকে প্রথমে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে এবং পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সন্ধ্যায় মামুনের মৃত্যু হয়।

পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, থানায় চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ছাড়া মামুনের সঙ্গে গালমন্দ কিংবা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটি ইন্দুরকানী থানায় ঘটেছে। তাই এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই।

ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. এনামুল হক বলেন, এ বিষয়ে মামুনের বিষপানের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. সাঈদুর রহমান বলেন, মামুনের আত্মহত্যার বিষয়টি শুনেছি। তবে তাকে গালমন্দ কিংবা মারধরের কোনো বিষয় জানা নেই। এ ছাড়া এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও পায়নি। মামুনের লেখা চিরকুটের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছি। মামুন এ বিষয়ে আগে কখনো তার কাছে কোনো অভিযোগও করেনি। চিরকুটের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ ঘটনায় কেউ দায়ী থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net