নিজস্ব প্রতিবেদকঃদক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর বরিশাল আধুনিক নৌবন্দরে পন্টুন সংকট দেখা দিয়েছে। পন্টুনের অভাবে লঞ্চ ভেড়ানোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের বিশাল আকৃতির লঞ্চগুলো একটির পেছনে আর একটি বার্দিং (ঘাটে ভেড়ানো) করতে হচ্ছে। এতে যাত্রী দুর্ভোগ বেড়েছে বরিশাল নৌবন্দরে। দুর্ঘটনারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল লঞ্চের মাস্টার ও চালকেরা বন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অবিলম্বে পন্টুন সংকটসহ বরিশাল নৌবন্দরের নানা সমস্যা সমাধানের দাবি তুলে ধরেছেন। আগামী ৩ অক্টোবর এসব নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, ‘বরিশাল নৌবন্দরে ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটের দৈনিক ৭ থেকে ৮টি লঞ্চ ভেড়ে। এর বাইরে ভায়া রুটের বরগুনা, তুসখালী, ঝালকাঠীর ৩-৪টা করে লঞ্চও প্রতি রাতে এই বন্দরে ভেড়ে। আর ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে লঞ্চের সংখ্যা বেড়ে ১২ থেকে ১৫টায় দাঁড়ায়। কিন্তু বন্দরে পন্টুন আছে মাত্র ৩টি। এতে বার্দিং করা যায় সর্বোচ্চ ৬টি। বাকি লঞ্চগুলো একটির পেছনে আর একটি ভেড়াতে হয়। বন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার দেখা করে লঞ্চের মাস্টারেরা এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
অন্তত একটি পন্টুন না বাড়ালে যাত্রী দুর্ভোগ সামলানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া বন্দরের পন্টুন দখল করে ভাসমান দোকান আর মোটরসাইকেলেও চরম দুর্ভোগ হয় যাত্রীদের। যদিও পন্টুনে এগুলো থাকা অবৈধ। আগামী মাসে নৌ-বন্দর সংলগ্ন কীর্তনখোলাসহ নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট ড্রেজিংয়ের দাবিও তুলে ধরেছেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন পারাবাত-১১ লঞ্চের মাস্টার শামিম আহমেদ, পারাবাত-১০ লঞ্চের মাস্টার কামরুল ইসলাম, সুরভী লঞ্চের মাস্টার মো. সালাম, কীর্তনখোলা লঞ্চের মাস্টার সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, ‘পন্টুনে লঞ্চ ভিড়তে এখন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। লঞ্চগুলো রাখার জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। বন্দরে পন্টুন বাড়ানোর বিষয় আগামী সভায় আলোচনা হবে। সেখানে ড্রেজিং এবং বয়া-বাতির বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে।
’ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চের অপর এক মাস্টার জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিআইডব্লিউটিএ বন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী মাসে ড্রেজিংয়ের জন্য সার্ভে করা হবে। ড্রেজিং করার জন্য লঞ্চ বন্দর থেকে সরিয়ে ফেলারও প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে পন্টুন বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন অনিশ্চিত। অথচ যে কোনো সময় যাত্রীরা দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন।’বরিশাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘বরিশাল নৌবন্দরে যাত্রীদের লঞ্চে উঠতে হয় চরম দুর্ভোগ নিয়ে। পন্টুনের বড় অংশই দখল করে রেখেছে ভাসমান দোকান। এগুলো থেকে চাঁদা নেয় স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা।
যাত্রী ওঠা-নামাকালে দেখা যায় পন্টুনে মোটরসাইকেল চলাচল করছে।’ তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে সমস্যা হলো একজন যাত্রী একটি লঞ্চ ডিঙিয়ে লঞ্চ থেকে নামেন। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন।’বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বরিশাল নৌবন্দরে পন্টুন সংকট রয়েছে। পন্টুন বৃদ্ধিরও চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা। কিন্তু এখনই করা যাচ্ছে না। আগামী ৩ নভেম্বর এক সভায় এ নিয়ে আলোচনা হবে। ওই সভায় নদীর যেসব পয়েন্টে নাব্য সংকট হতে পারে সেগুলো ড্রেজিং করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply