গৌরনদী প্রতিনিধি॥ বরিশালের গৌরনদীর ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীবোঝাই বাসে ড্রামের ভেতর থেকে পাওয়া নারীর মরদেহের পরিচয় পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।শনিবার পুলিশ জানায়, ওই নারীর নাম সাবিনা বেগম।তিনি বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুরের সাহেব আলীর মেয়ে ও কুয়েত প্রবাসী শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। ৩০ বছর বয়সী সাবিনা তিন শিশু সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন বলে জানায় পুলিশ।
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান,শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে সাবিনা বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দিয়াসুরে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। সেখানে বাচ্চাদের রেখে তিনি বরিশালে যান।
গৌরনদী পুলিশ একদিনের ব্যবধানে শনিবার বিকালে নারীর পরিচয় নিশ্চিত হলেও হত্যার সঠিক কারণ এখনো উদঘাটন করতে পারেননি।
প্রবাসী শফিকুল ইসলামের ছোট ভাই মনির হাওলাদার জানান, তার ভাই-ভাবির মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার জন্য গৌরনদীর মাহিলাড়া এলাকার খালেক হাওলাদার বেশ কিছুদিন আগে ৪ লাখ টাকা দেয়।বিদেশে পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় খালেক বিদেশে যেতে অসম্মতি জানালে ভাবি সম্প্রতি তাকে (খালেক) দেড় লাখ টাকা ফেরত দেয়। গত শুক্রবার সকালে দুই সন্তান নিয়ে দিয়াসুরের বাড়িতে আসেন ভাবি। সকাল ১০টার দিকে খালেক ডাকছে বলে বরিশাল যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
সারাদিনেও তিনি বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। ওই রাতে ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে বাসের ছাদে ব্যারেলের মধ্য থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে সাবিনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার দিনভর চেষ্টা এবং আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে সাবিনার পরিচয় শনাক্ত করে আমাদের (স্বজনদের) খবর দেয়া হলে আমরা ভাবির মরদেহ শনাক্ত করি।
উল্যেখ্য,শুক্রবার রাতে বরিশালের আন্তঃরুটে যাতায়াতকারী আরসি পরিবহনের একটি বাস বরিশালের কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ভুরঘাটার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বাসটি নগরীর গড়িয়ারপার এলাকায় পৌঁছলে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি একটি ড্রাম বাসে তুলে দেন।
তিনি হেলপারকে বলেন, ড্রামে কাচের জিনিস আছে তার লোকজন ভুরঘাটা থেকে ড্রামটি নামিয়ে নেবে। বাসটি ভুরঘাটা পৌঁছানোর অনেক পরও কেউ ড্রাম নিতে আসেনি। এক পর্যায়ে বাসের সব যাত্রী নেমে যায়।
পরে হেলপার নিজেই ড্রামটি বাস থেকে নামিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় খুলে এক নারীর লাশ পান।এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসের চালক ও হেলপারকে থানায় নেয়া হয়।
ওসি আফজাল হোসেন জানান, সুরতহাল রিপোর্টে ওই নারীর মাথার পেছনের দিকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ওই নারীকে হত্যা করে মরদেহ গুম করতে ড্রামে ঢুকিয়ে নিরাপদ কোনো স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। এই খুনের নেপথ্য সঠিক কারণ কী তা খুঁজতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply