নিজস্ব প্রতিবেদক ॥বরিশাল নগরীতে ব্যাটারি চালিত হলুদ অটোর ভুয়া টোকেন বাণিজ্য করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েকটি সংজ্ঞবদ্ধ প্রতারক চক্র।চক্রটি নগরীর রুপাতলি মেসার্স লিলি ফিলিং এর বিপরীতে হলুদ অটো সংগঠন নামের সাইনবোর্ড টানিয়ে প্রকাশ্যে চালাচ্ছে চাঁদাবাজি, অদৃশ্য কারনে নীরব ভুমিকায় প্রশাসন।
বরিশাল নগরীতে ব্যাটারি চালিত হলুদ অটো সংগঠনের নাম করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতাচ্ছেন কেডিসির লেদু সিকদার,রুপাতলির জামাল গাজী, চৌমাথার আফজাল মজুমদার, করিম, নথুল্লাবাদের যাত্রা কালামসহ ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র, এদের অধিকাংশই আগে অটোচালক ছিলেন।জানা গেছে, কয়েক বছর পূর্বে নগরীতে চালু হয় ব্যাটারি চালিত হলুদ অটো। বিগত দুই মেয়রের সময়ে সর্বমোট ২৬১০ টি অটোর লাইসেন্স প্রদান করেন সিটি কর্পোরেশন, তবে বর্তমানে নগরীতে চলাচল করছে তার কয়েকগুণ হলুদ অটো, যার কারনে সাগরদি রুপাতলি লঞ্চঘাট পলাশপুর সড়ক অটোর দখলেই থাকে, এজন্য যানজটের ভুক্তভোগী হতে হয় নগরবাসিদের।
বিসিসি সূত্র বলছে বিগত সময়ে কয়েক দফায় মিলে সর্বমোট ২,৬১০টি অটোর লাইসেন্স প্রদান করেন এবং তা বাৎসরিক নবায়নযোগ্য। বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অটোর নবায়ন বন্ধ করেন তাও এক বছরের বেশি। বিসিসির নবায়ন খরচ না থাকলেও অটো শ্রমিকদের প্রতিমাসে গুনতে হচ্ছে এক থেকে দুই হাজার টাকা। এছাড়া প্রতারক চক্র ভুয়া টোকেন বানিয়ে ও সংগঠনের নামে হাতাচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এদিকে বিসিসির এক দ্বায়িত্ববান কর্মকর্তা জানান, নবায়ন বন্ধ মানেই হলো হলুদ অটো অবৈধ, আর অবৈধ যানের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, ট্রাফিক পুলিশ কেন বা কোন স্বার্থে এখনো নগরীতে হলুদ অটো চলাচল করতে দিচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়। নথুল্লাবাদ এলাকার অটো চালক আলামিন বলেন রাস্তায় ইনকাম থাকুক আর না থাকুক সংগঠনের লোকজন মাস পেরোলেই হাতাচ্ছেন অটো প্রতি ১ হাজার টাকা। এমন অভিযোগ রসুলপুরের সোহরাবসহ সকল শ্রমিকদের। যে লেদু, জামাল গাজীরা সংগঠনের নামে তিনশো টাকার সিল মারা বিট কার্ড ও স্টিকার দিয়ে ১ হাজার করে টাকা নেয় এই টাকা না দিলে রাস্তায় অটো চালাতে দেয়না সংগঠনের লোকজন।প্রতারক চক্র ও সংগঠনের নামে যারা অটোশ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বরিশাল সিটি মেয়র ও প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছেন অটোশ্রমিকরা।
এবিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. জাকির হোসেন মজুমদার খবর বরিশালকে জানান, টাকা পয়সা কারা হাতাচ্ছেন আমার জানা নেই, তিনি আরো বলেন হলুদ অটো অবৈধ, আর এই অবৈধ হলুদ অটোর বিরুদ্ধে আটক অভিযান চলমান রয়েছে।অবৈধ ভাবে সড়কে চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের কথিত সাধারণ সম্পাদক কেডিসির লেদু সিকদার বলেন নিউজটি প্রকাশ কইরেন না, আপনি কোথায় আছেন? আপনার সাথে দেখা করবো, এবং লেদু আর্থিক প্রলোভনও দেখান যাতে নিউজটি প্রকাশ না হয়।
পরক্ষনেই কথা হয় সংগঠনের কথিত সহ-সভাপতি আফজাল মজুমদারের সাথে চাদাঁর টাকার ভাগ কে কে পায় এমন প্রশ্নের জবাবে আফজাল বলেন টাকা কালেকশন করে ১০/১২ জনে আর কারে কত দেয় সেটা কেডিসির লেদু ও রুপাতলির জামাল গাজী জানে, আর বাকিটা আমরা সংগঠনের লোকেরা নেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বলেন,মাঠ পর্যায়ে কোনো সংগঠন বা ব্যাক্তি নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে কোনো টাকা তুলতে পারবেনা।সড়কে সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।এসকল চাঁদাবাজদের ধরতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা মাঠপর্যায়ে ছদ্মবেশে কাজ করছে।তিনি আরো বলেন,নগরীর প্রতিটি নাগরিকের নিজ অবস্থান থেকে ট্রাফিক আইন মান্যকারী হয়ে, নিরাপদ যান চলাচলের সামাজিক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এই শহরকে একটি যানযট মুক্ত পরিবেশ উপহার দেয়া সম্ভব মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply