নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-৪ এর সহকারী রেজিষ্ট্রার ডা. মাসুদ খানের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গঠন হওয়া ওই কমিটিকে আগামি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন হাসপাতাল পরিচালকের নিকট জমা দিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে সহকারী রেজিষ্ট্রার ডা. মাসুদ খানের ওপর হামলার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ঘটনার দিন তার ওপর কোন হামলা হয়নি, বরং কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক বরাবর দেয়া একটি স্মারকলিপিতে এমনটিই দাবি করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপি প্রদানকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম, সজল পান্ডে, তৌহিদুল ইসলাম, তন্ময় চক্রবর্তী, রিজভীসহ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেছেন, ‘মূলত ডা. মাসুদ খান কমিশন বানিজ্য টিকিয়ে রাখতেই রোগীদের পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালের বাহিরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য করেছেন। রোগীরা সেখান থেকে পরীক্ষা না করালে সে রিপোর্ট দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি। এমনকি রোগীর স্বজনদের সাথে অশোভন আচরণও করেন ওই চিকিৎসক।
তারা বলেন, ‘রোগীদের সাথে এমন আচরণের জ্বের ধরেই ইন্টার্নদের সাথে ডা. মাসুদ খানের মতবিরোধ রয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে একজন ইন্টর্নের নাম ভাঙিয়ে কিছু কমিশনও হাতিয়ে নিয়েছেন ওই চিকিৎসক। যা নিয়ে কথা বলতে গেলে ডা. মাসুদ খান ইন্টার্নদের সাথে অশোভন আচারণ করেন।
আবার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে কমিশন বানিজ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ডা. মাসুদ খান ওই ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদ স্যারকে তার নিজ অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া বলেও অভিযোগ করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। আর এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়েই গত ২০ অক্টোবর ডা. মাসুদের কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু ওই দিন কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলামের।
তিনি বলেন, ‘ডা. মাসুদ খান ইন্টার্নদের নানানভাবে অত্যাচার করছেন। যেমন চারজন মেয়ে ইন্টার্নের আটকে থাকা ভাতা হাসপাতাল পরিচালক দেয়য়ার অনুমতি দিলেও ডা. মাসুদ খান ক্ষমতার অপব্যবহার করে তা আটকে রেখেছেন। আবার নারীসহ সকল ইন্টার্নদ এবং কর্মচারীদের সাথে তিনি অশালীন আচরণ করছেন। এসব অপরাধ ধামাচাপা দিতেই ডা. মাসুদ খান ইন্টার্ন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সজল পান্ড।
এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, ‘ইন্টার্নদের কথা আমরা শুনেছি, তারা স্মারকলিপি দিয়েছে। যেখানে বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে ডা. মাসুদের বিরুদ্ধে। যা খতিয়ে দেকা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আবার ডা. মাসুদ খান তার ওপর হামলার যে অভিযোগ করেছেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘পুরো ঘটনার তদন্তে সহযোগী অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন বাবলুকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটি পুরো বিষযটি তদন্ত করে দেখবেন এবং পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর দুপুরের দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অফিস কক্ষে সহকারী রেজিষ্ট্রার ডা. মাসুদ খান হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ উঠে।
বহিরাগত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে চিকিৎসকদের সম্পর্কের অবনতি ও কমিশন বানিজ্যকে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ওই চিকিৎসকের। এখন হামলার ঘটনা ধামা চাপা দিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মিথ্যাচার করছেন বলেও অভিযোগ ওই সহকারী রেজিষ্ট্রারের।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply