মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:৩৬

বরগুনায় শিশু শ্যালককে পানিতে চুবিয়ে হত্যা

বরগুনায় শিশু শ্যালককে পানিতে চুবিয়ে হত্যা

dynamic-sidebar

বরগুনা প্রতিনিধি ::বরগুনায় আপন শ্যালককে মেরে বিষখালী নদীতে ডুবিয়ে দিলেন দুলাভাই।

জানা যায়, স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার জের ধরে স্বামী তার আপন এক ভাইকে মেরে বিষখালী নদীতে ডুবিয়ে দেন এবং আর এক ছোট ভাইকে মেরে ফেলার সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

বৃহস্পতিবার(৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার ৭নং ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা নামক এলাকায় এঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় একই পদ্ধতিকে আফসান নামের দেড় বছরের অপর শিশু শ্যালককে খুনের চেষ্টার সময় স্থানীয়রা ওই দুলাভাই মোসলেমকে (২২) হাতেনাতে আটক করেন। এসময় দেড় বছর বয়সী আফসানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে এলাকাবাসী মোসলেমকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডালভাঙা এলাকার নদী সংলগ্ন একটি দীঘিতে শিশু আফসানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করছিলেন মোসলেম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তারা দ্রুত শিশুটিকে ঘাতক মোসলেমের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়রা মোসলেমকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।

নিহত শিশু আবদুল্লাহর বাবা ছগীর জানান, তিন মাস আগে অসুস্থ হয়ে তার স্ত্রী’র মৃত্যু হয়। এরপর আবদুল্লাহ (৬) ও আফসানকে (১৮ মাস) তার মেয়েরা লালন- পালন করতেন। এক সপ্তাহ আগে তার জামাতা মোসলেম বরগুনায় তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এরপর বৃহস্পতিবার ( ৮ অক্টোবর) বিকেলে ডালভাঙা এলাকায় নানা শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসে তার দুই ছেলে আবদুল্লাহ ও আফসানকে নিয়ে ঘুরতে বের হন দুলাভাই মোসলেম। পরে সন্ধ্যার পরে তিনি জানতে পারেন তার বড় ছেলে আবদুল্লাহকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর মরদেহ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন জামাতা মোসলেম। এছাড়াও ছোট ছেলে আফসানকে একই প্রক্রিয়ায় হত্যার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতে নাতে আটক করেন।

তিনি আরো জানান, মোসলেম আমার বড় মেয়ে ছবির জামাতা। ঢাকায় থাকা অবস্থায় আমার মেয়ে ও নাতীকে ঠিকমত ভরণ – পোষণ দিতো না জামাতা মোসলেম। তাই মাস খানেক আগে মেয়ে ছবি তার সন্তান নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। এরপর মোসলেমও সপ্তাহখানেক আগে এসে তার বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমরা মোসলেমের কাছে আমার নাতিকে দিতে রাজী হইনি। এর জেরে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে মোসলেম।

ঘাতক মোসলেম শিশু শ্যালক আবদুল্লাহকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে যেতে এসেছিলাম, কিন্তু আমার স্ত্রী ও শ্বশুর নিয়ে যেতে দেয়নি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি শ্যালক আবদুল্লাহ ও আফসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে বেড়াতে নিয়ে যাই। এরপর প্রথমে আবদুল্লাহকে দীঘিতে ফেলে ডুবিয়ে হত্যা করে লাশ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেই। এরপর আফসানকেও একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করি।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন,আমরা আনুমানিক রাত তিনটা পর্যন্ত নিহত শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। সকালে বরিশাল থেকে একটি ডুবুরি দল উদ্ধারের জন্যে এসেছে। কিন্তু নিহত শিশুটিকে এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, এবিষয়ে জড়িত মূল ঘাতক মোসলেমকে গ্রেফতার এবং তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net