শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৯:২২

শিরোনাম :
সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল দুই উৎসবের ছুটি শেষে বরিশাল থেকে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ ঈদ আনন্দ থাকতেই বরিশালে বইছে পহেলা বৈশাখের আনন্দ সাংবাদিক মামুন অর রশিদের মায়ের মৃত্যুতে এস এম জাকির’র শোক

শেবাচিম হাসপাতালের বর্জ্যে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা!

dynamic-sidebar

এইচ আর হীরা॥বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোনো চিকিৎসাবর্জ্যই বিনষ্ট বা শোধন করা হচ্ছে না। সরাসরি সব ধরনের চিকিৎসাবর্জ্য নিয়ে ফেলা হচ্ছে হাসপাতালের গেটের সামনে।এতে মারাত্মকভাবে পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করা হচ্ছে।হাসপাতালের ওয়ার্ডে,অপারেশন থিয়েটারে, আইসিইউতে ( নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বিভিন্ন ডাস্টবিনে রাখার পরে প্রতিদিনের বর্জ্য কিছুসময় পরপর মেডিক্যালের নির্দিষ্ট ময়লার স্থানে ফেলা হয়।তারপরও ড্রেসিংয়ের গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা থেকে জীবাণুর মাধ্যমে ইনফেকশন ছড়ানোর ঝুঁকি থেকেই যায়।

বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।করোনার এই ক্রান্তিকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বর্জ্য সঠিকভাবে অপসারণ না করায় দুর্গন্ধে নাজেহাল হচ্ছে চিকিৎসাসেবা গ্রহীতা থেকে শুরু করে আশপাশের বাসিন্দারা।শেবাচিম হাসপাতালের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভবন সংলগ্ন বিভিন্ন খোলা জায়গাতে গর্ত করে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।এতে করে হাসপাতাল কম্পাউন্ড অনেকটাই ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হতে শুরু করেছে।বর্তমানে শেবাচিম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের পাশে খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলায় পুরো হাসপাতাল এলাকাটি পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে।

 

এতে জরুরি বিভাগের গেটসহ আশেপাশের এলাকায় অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ময়লার জন্য হাসপাতাল এলাকার পরিবেশটাই দূষিত হয়ে পড়েছে। আর এ কারণে আশপাশের মানুষ নয়, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও তাদের স্বজনরাও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। এ থেকে দ্রুত তারা পরিত্রাণেরও দাবি জানিয়েছেন।বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানা যায়, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ২০০৮ সালে আইন পাস হয়,যদিও তার কার্যকারিতা খুবই কম। যে কারণে হাসপাতালের মেডিক্যাল বর্জ্য এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা প্লান্ট থাকা জরুরি হলেও এখন পর্যন্ত বরিশালে এমন কোনো প্লান্ট তৈরী করা হয়নি। এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য অপসারণ নিয়মিত করা হচ্ছে। তারপর তা হাসপাতাল ভবনের পেছনের অংশের নির্ধারিত স্থানে ফেলা হলেও করোনার শুরু থেকে সেখান থেকে বিসিসি কর্তৃপক্ষ সংক্রমণ এড়াতে তা অপসারণ করেনি। কারণ সেখান থেকে খোলা ট্রাকে করে ময়লাগুলো নগরের মধ্য দিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ডাম্পিং প্লেসে নিয়ে যাওয়া হতো। আর এ কাজটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন সহযোগিতা ছাড়াই করে আসতো।তবে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় শুরুর দিকে এসব বর্জ্য হাসপাতাল থেকে ডাম্পিং প্লেসে নিয়ে যাওয়াকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

এরপর সিটি করপোরেশন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আলোচনায় হাসপাতালের পেছনের নির্ধারিত স্থানে গর্ত করে ফেলা শুরু হয়। এছাড়া করোনা ওয়ার্ডের কিছু বর্জ্য নতুন ভবনের পাশেই ফেলতে শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জায়গাগুলো বর্জ্যে ভরে গেলে সেগুলোকে মাটি চাপা দিয়ে নতুন করে নতুন স্থানে গর্ত করে ময়লা ফেলা শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্জ্য পরিশোধনের জন্য ইন্টার্ন হোস্টেলের পেছনের খেলার মাঠের বিপরীতে প্রায় এক দশক আগে টিন দিয়ে স্থাপিত ইনসিনারেটর ও অটোক্লেভ মেশিনের ঘরটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অযত্ন-অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

বর্তমানে ঘরটির চারদিকে আগাছার জন্ম নেওয়ায় সেটা এখন ভূতুরে বাড়ির আদলে পরিণত হয়েছে। হাসপাতেলে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন সাদ্দাম হোসেন বলেন,বর্তমানে যে স্থানে হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল বর্জ্যসহ সকল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে তাতে করে একদিকে যেমন সংক্রমণের ব্যাধি ছড়ানোর মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে আবার পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েও দাঁড়াচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এই বর্জ্যগুলো বৃষ্টির পানির সাথে মিশে বিভিন্ন খাল, ডোবা, নদ-নদীর পানিতে যাবে। ফলে পানি দূষিত হবে। আবার মেডিকেল বর্জ্যগুলোর জীবাণু বাতাসে মিশে বায়ু দূষিত করবে।হাঁসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০১১ সালে শেবাচিম হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ধ্বংসকারী মেশিন দেওয়া হয়েছিল, তা বছর খানেক পরই ওই মেশিন বিকল হয়ে যায়। পরে তা সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

 

আর এই ক্লিনিক্যাল বর্জ্যই রোগ-বালাই ছড়িয়ে পরার আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন সবসময় হাসপাতালের বর্জ্যগুলো নিতো, কিন্তু গত এপ্রিল থেকে তারা ময়লাগুলো নিচ্ছে না। তাই হাসপাতালের আশপাশে মাটিতে বড় বড় করে বর্জ্যগুলো ফেলে তা আবার ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। তবে এভাবে করতে করতে এখন হাসপাতালের সামনে ছাড়া আর কোথায় জায়গা খালি না থাকায় সেখানেই বর্জ্য ফেলতে হচ্ছে। আর হাসপাতাল ভবনের পেছনের দিকটাতে কলেজ থাকায় সেখানে ফেলা যাচ্ছে না।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net