শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৩৫

জমে উঠেছে ভিমরুলির শত বছরের পুরোনো ভাসমান পেয়ারা বাজার

জমে উঠেছে ভিমরুলির শত বছরের পুরোনো ভাসমান পেয়ারা বাজার

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল এবং পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম পেয়ারা বাগান। ঝালকাঠি জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলিতে অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাসমান পেয়ারা বাজার। তিন দিক থেকে আসা খালের মোহনায় বসে ভিমরুলির এই ভাসমান বাজার। জুলাই আগস্ট পেয়ারার মৌসুম হলেও মাঝে মাঝে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ও চলে এই বাজার। আগস্ট মাস ভাসমান পেয়ারা বাজারের মূল সময়।

সকাল ১১ টার পর বাজারের ভির আস্তে আস্তে কমতে থাকে। তবে এই ভাসমান পেয়ারা বাজারেও পড়ে ছে করোনা মহামারীর প্রভাব। এবারের চিত্র একটু ভিন্ন থাকলেও দৃষ্টি নন্দন পেয়ারা বাজারে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত ক্রেতা বিক্রেতা এবং ভ্রমণ পিপাসু মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাসমান এই হাটে ভীমরুলী, আটঘর কুরিয়ানার আশে পাশের এলাকা থেকে পেয়ারা নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। শত বছরের এই হাটের আশে পাশেও রয়েছে অনেক পুরোনা পেয়ারা বাগান। যেসব বাগান থেকে উৎপাদন হয় লক্ষাধিক মণ পেয়ারা। এখান থেকেই ক্রেতারা বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় পেয়ারা নিয়ে যান।

ভাসমান এই হাটের পেয়ারা বিক্রেতা মোঃ মনির হোসেন বলেন, রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা প্রতিদিন সকালে এই হাটে ভিড় করেন। এখানে থেকে বেশিরভাগ পেয়ারা রাজধানীতে যায়।

তিনি বলেন, কাঁচা পেয়ারা প্রতিমণ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা এবং পাকা পেয়ারা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এক সময় দাম না পেয়ে এই হাটে চাষীরা পেয়ারার নৌকা ডুবিয়ে দিয়ে খালি নৌকা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতেন।

কিন্তু সম্প্রতি পর্যটন, ক্রেতা বাড়ায় এই বাজারের জৌলুস বাড়তে থাকে। এর ফলে এখানের স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হচ্ছে। এই ভাসমান হাটে পেয়ারার মৌসুমে কেনাবেচা হয় কোটি কোট টাকার পেয়ারা।

ছোট ছোট নৌকায় পেয়ারা বাগান থেকে এই ভাসমান বাজারে নিয়ে আসেন। এখান থেকেই প্যাকেট করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌ পথে পাইকাররা নিয়ে যায়। তবে পেয়ারা পাকার দুই দিনের মধ্যে পেয়ারা বিক্রি করতে না পারলে পেয়ারা পচে যায়।

এ অঞ্চলে হিমাগার বা জ্যাম জেলির কারখানা না থাকায় বাগানেই অনেক পেয়ারা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন আক্ষেপ করেন চাষীরা।

বাজারে আসা পেয়ারা চাষী তরুন চক্র বলেন, পেয়ারা যখন পাকা শুরু করে তখন অনেক পেয়ারা এক সাথে পাকে। যার ফলে বাধ্য হয়েই কম দামে পেয়ারা বিক্রি করতে হয়। এখানে পেয়ারা প্রক্রিয়াজাত করার কোন সুযোগ না থাকায় আমরা অনেক সময় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

এ দিকে ঢাকা থেকে আসা পর্যটক তৌহিদ হাসান বলেন, এখানে প্রতিদিন যে পরিমাণ বেচা কেনা দেখলাম তাতে এখানটা সেই অনুপাতে উন্নত নয়। থাকা খাওয়া বা ভালো কোন শৌচাগারের ব্যবস্থাও নেই। যার ফলে বিপদে পড়তে হয় নারী পর্যটকদের। এটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net