নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের বানারীপাড়ায় থ্রি-হুইলার (মাহিন্দ্রা-আলফা) মালিক সংগঠনের নেতাকে মারধরের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মালিক সংগঠনটির সহ-সভাপতি মো. জামাল হোসেনকে রোববার বিকেলে তুলে নিয়ে থানা অভ্যন্তরে আটকে বেধম পেটায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে ও সংগঠনের সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে শাস্তিস্বরুপ দুই পুলিশ সদস্যকে বানারীপাড়া থানা থেকে সরিয়ে সোমবার সকালে বরিশাল পুলিশলাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে।
স্থানীয় সূত্র ও সংগঠনটির নেতারা জানান, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পৌরশহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারীবাড়ি সংলগ্ন পাশে থানা পুলিশের কনস্টেবল মো. শফিকুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলটি সড়কে রেখে কথা বলছিলেন। এ সময় সেখানে মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. জামাল হোসেনের একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে ওই মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটি সড়কের ওপর পড়ে লুকিং গøাস ভেঙে যায়। এ নিয়ে পুলিশ কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম ও মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. জামাল হোসেনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে জামাল হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এবং একটি কক্ষে নিয়ে তারা দুজনে জামাল হোসেনকে বেধম মারধর পরবর্তী আটক রাখে। এই বিষয়টি জানাজানি হলে সংগঠটির নেতৃবৃন্দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে তারা পরিবহন বন্ধ রাখে। এবং বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অভিযোগ আকারে অবহিত করেন।
পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি ও জেলা মাহিন্দ্রা-আলফা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মো. কালাম জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে ওই বিকেল থেকে বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য মাহিন্দ্রা-আলফা চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এবং সঠিক বিচার না পেলে সোমবার সকাল থেকে বৃহত্তর বরিশালের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।
নিশ্চিত হওয়া গেছে- উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ওই দিন রাতেই বাকেরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদ বানারীপাড়া থানায় ছুটে যান। এবং আহত মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. জামাল হোসেন, পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. কালামসহ অভিযুক্ত দুই পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা শোনেন। পরবর্তীতে শাস্তিস্বরুপ এই পুলিশ কর্মকর্তা এসআই রিয়াজ হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে উত্তেজনা প্রশমিত হয়। পরে রাতে বরিশাল জেলা মাহিন্দ্রা-আলফা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ তাদের ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়।
এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, মাহিন্দ্রা-আলফা শ্রমিক নেতা জামাল হোসেনের সঙ্গে দুই পুলিশের ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে বাকেরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদ শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অভিযুক্ত দুই পুলিশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply