নিজস্ব প্রতিবেদকঃবরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগী মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।
গত ২৯ মার্চ থেকে বুধবার (১ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১০১ জন। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ৩৭ জন। করোনা ইউনিটে প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় গত ২৯ মার্চ।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম বাকির হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপাশার এলাকার এক ব্যক্তি (৮০) মারা যান। এর আগে সকাল সোয়া ৭টার দিকে মারা গেছেন নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের জুমির খান সড়কের এক ব্যক্তি (৭০)।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় ঝালকাঠি সদরের ভিরসেনা গ্রামের আরও এক ব্যক্তি (৫৫) এবং ওইদিন রাত পৌনে ৮টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনির এলাকার এক ব্যক্তি (৪৫) মারা যান। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত তিন মাসে মারা গেছেন ১০১ জন। তাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিলেন ৩৭ জন।
ডা. এস এম বাকির হোসেন বলেন, গত ১৭ মার্চ থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ৬৮৫ জন রোগী ভর্তি হন। এর মধ্যে ২৬৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৬৬ জন রোগী। তাদের মধ্যে ১৮৫ জন ছিলেন পজিটিভ এবং নেগেটিভ ছিলেন ২৮১ জন। বর্তমানে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১২৭ জন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ৬৩ জন।
এদিকে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা না পাওয়া ও চিকিৎসকদের অবহেলা কারণে অধিকহারে রোগী মৃত্যুর কারণ বলে মনে করছেন রোগীদের স্বজনরা। মারা যাওয়া একাধিক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন, করোনা ইউনিটে নামমাত্র চিকিৎসা হয়। চিকিৎসকরা রোগীর কাছে যান না। কোনো রোগীর অবস্থা খারাপ হলেও চিকিৎসক ডেকে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে শ্বাসকষ্টের রোগীদের ফেলে রাখা হয় অক্সিজেন এবং আইসিইউসেবা ছাড়া।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম বাকির হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির আগে হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ১৬ জনের মৃত্যু হতো। এখন গড়ে ১৪ জনের মৃত্যু হচ্ছে। সেদিক বিবেচনায় অধিকহারে মৃত্যু হচ্ছে বলা যাবে না। তবে করোনা ইউনিটে যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ ছাড়াও হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, কিডনি, লিভারজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন। আগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের নির্ধারিত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হতো। সেখানে নির্ধারিত রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দিতেন। কিন্তু করোনা ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেভাবে নেই। কিছু রোগীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটিও একটি কারণ হতে পারে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply