বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:০৩

আমতলীতে মৃত্যু ও কার্ডধারীদের নামের চাউল উঠিয়ে ডিলারের আত্মসাৎ

আমতলীতে মৃত্যু ও কার্ডধারীদের নামের চাউল উঠিয়ে ডিলারের আত্মসাৎ

dynamic-sidebar

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃবরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের দশ টাকা কেজি মূল্যের চাউলের ডিলার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে মৃত্যব্যাক্তি ও কার্ডধারীদের চাল উঠিয়ে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে ওজনে কম দেয়ারও। এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দাখিল করেন ভূক্তভোগীরা।

 

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেরার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডে সরকার দশ টাকা কেজি মূল্যের চাউল বিতরণের জন্য মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারকে গরীব, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে ত্রিশ কেজি করে চাল বিতরণের জন্য ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেয়। শুরু থেকেই এই ডিলার চাল বিতরণে অনিয়ম করে আসছেন। জনপ্রতি ত্রিশ কেজি চালের বিপরিতে সে ২২ থেকে ২৫ কেজির বেশী চাল কখনোই দেননা। কেহ ওজনে কম দেয়ার বিষয় প্রতিবাদ করলে সে তার চাল রেখে খালি হাতে পাঠিয়ে দেয়।

 

এছাড়া অনেক মৃত্যু ব্যক্তি ও বৈধ কার্ডধারী পরিবারকে চাল না দিয়ে তিনি তা আত্মসাৎ করে ভূয়া মাস্টার রোল জমা দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অনেক সময় কার্ডধারী মৃত্যু ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়েও তাদের  নামের চাল আত্মসাৎ করেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ওই এলাকার ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে ডিলার জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন আবুল কালাম, ইলিয়াস হোসেন ও আসমা বেগম।

 

ভোক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, দশ টাকা কেজি মূল্যের চাল বিতরণ তালিকায় নাম থাকা ক্রমিক নং ৩৮৪ ঘোপখালী গ্রামের মৃত্যু জাহাঙ্গীর হাওলাদার, ক্রমিক নং ৩৭৯ মৃত্যু মোঃ মোনসের আলী হাওলাদার, ও ক্রমিক নং ২১২ চরকগাছিয়া গ্রামের মৃত্যু লাল মিয়া মাঝিসহ অসংখ্য মৃত্যু ব্যক্তির চাল তার পরিবারের কাউকে না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেন।
অপরদিকে কার্ডধারী ক্রমিক নং ৩৭৮ ঘোপখালী গ্রামের মোঃ নিজাম উদ্দিন হাওলাদার, ক্রমিক নং ৫৪ খলিল গাজী ও ক্রমিক নং ৩১২ নূর মোহাম্মদসহ অনেক কার্ডধারীকে চাল না দিয়ে তিনি নিজেই তা আত্মসাৎ করেন।

 

 

অভিযোগকারী আবুল কালাম বলেন, তালিকায় নাম থাকা আমার বোন জামাই জাহাঙ্গীর গত এক বছর পূর্বে মারা যায়। সেই থেকে আমার বোন নাজমা বেগম খুবই অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছেন। যতবার আমার বোন চাল আনতে গেছেন ততবার তাকে চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন ডিলার জাহাঙ্গীর। অথচ জমা দেয়া মাস্টাররোলে দেখা গেছে মৃত্যু জাহাঙ্গীর চাল উত্তোলণ করেছেন। মৃত্যু ব্যক্তির চাল তার পরিবারের কাউকে না দিয়ে তিনি তা আত্মসাৎ করেছেন। তালিকায় নাম থাকা নিজাম ও আব্বাস বলেন, ডিলার জাহাঙ্গীর একবার আমাদের চাউল দিয়ে আমাদের নামের সুলভ মূল্য কার্ডটি (বই) তিনি রেখে দিয়েছেন। জমা দেয়া মাস্টার রোলে দেখা গেছে প্রতিমাসে আমাদের সে চাউল দিয়েছেন।

 

 

ডিলার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের কাছে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যা। আমি সঠিকভাবেই তালিকায় অর্ন্তভূক্ত সকলর মধ্যে চাল বিতরণ করেছি। দুই একবার চাল বিতরণে নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ চালের চেয়ে ওজনে কিছুটা চাল কমবেশী হতে পারে। সুলভ মূল্য কার্ডে দেখা যায় তালিকায় নাম থাকা মৃত্যু ও জীবিত ব্যক্তিদের পরিবারকে এক বছর ধরে কোন চাল দেননি, অথচ তাদের চাল দিয়েছেন মর্মে মাস্টার রোল জমা দিয়েছেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি এর কোন স্বদউত্তর দিতে পারেননি।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন মুঠোফোনে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ডিলারের বিরদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। মো. হাসান মৃধা

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net