শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:৩০

শিরোনাম :
সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল দুই উৎসবের ছুটি শেষে বরিশাল থেকে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ ঈদ আনন্দ থাকতেই বরিশালে বইছে পহেলা বৈশাখের আনন্দ সাংবাদিক মামুন অর রশিদের মায়ের মৃত্যুতে এস এম জাকির’র শোক

খেতে হচ্ছে আধপেটা, লজ্জায় পারছেন না চাইতে

dynamic-sidebar

শফিক মুন্সি ::

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত আছেন ৭১ জন৷  এই মানুষগুলো দৈনিক মজুরি শর্তে কাজের বিনিময়ে টাকা পান। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাব রুখতে প্রায় ১ মাস যাবৎ বন্ধ প্রতিষ্ঠানটি৷ কবে খুলবে সে ব্যাপারেও নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কেউ। তাই দীর্ঘদিনের জন্য সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়েছে এই লোকগুলো।

জমানো টাকায় বেশ কদিন চলার পর ঘর যখন চাল শূন্য। তখন সহায়তার আশায় কয়েকজন গিয়েছিলেন প্রশাসনের কাছে৷ কিন্তু আইনী বাধ্য বাধকতায় তাদের জন্য কিছু করা সম্ভব নয় বলে সোজাসাপ্টা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করেই বেঁচে থাকার কঠিন পথ পারি দিচ্ছেন পরিবার নিয়ে।

সামাজিক সম্মানহানির ভয়ে তারা পারছেন না আশেপাশের কারো কাছে কিছু চাইতে। এমনকি সংবাদ তৈরি করার জন্য তথ্য চাইলে নিজের নাম গোপন রাখার অনুরোধও করেন কেউ কেউ।কারণ খবরে নাম প্রকাশ পেলে নাকি চাকরি চলে যাবার সম্ভাবনা আছে!

বিশ্ববিদ্যালয়টির রসায়ন বিভাগের ল্যাব সহকারী জহিরুল ইসলাম (রূপক নাম)। কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) শর্তে অস্থায়ী ভিত্তিতে সেখানে চার বছর যাবৎ কর্মরত আছেন। বিয়ে করার পর এটাই তাঁর প্রথম ঈদ। স্বপ্ন ছিল এবারের ঈদে নিজের বাবা-মা সহ শ্বশুর বাড়ির সবাইকে কিছু উপহার দেবার চেষ্টা করবেন। কিন্তু এখন সে স্বপ্ন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। করোনা সংকটে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি হয়ে পড়েছেন উপার্জনহীন। এমন অবস্থায় ঈদ দূরে থাক দৈনন্দিন জরুরী খাদ্যদ্রব্য কিনতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

তিনি বলেন, ” প্রায় ১ মাস যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কবে নাগাদ খুলবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। জমানো অল্প কিছু টাকায় এতদিন কষ্টে চলেছি। এখন আর পারছি না”। তিনি আরো জানান, কারো কাছে লজ্জায় সহায়তা চাইতে পারছেন না তিনি। কষ্ট করে যদি কারো কাছে চেয়েও বসেন সেখান থেকে শুনতে হচ্ছে চাকরির খোঁটা। কারণ সকলের বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করার সুবাদে সেখান থেকেই কিছু পাবেন তিনি৷

একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন সেখানকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখায় কর্মরত জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ” পাঁচ বছর যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করি৷ স্থায়ী হবো এই আশায় অপেক্ষা করতে করতে অন্য কোথাও প্রবেশের বয়স শেষ হয়ে গেছে।কিন্তু এই বিপদের দিনে ঘরে যখন খাবার মতো কিছু নেই তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আমাদের কথা মনে রাখলো না”।

তিনি আরো জানান, গত ১৯ মার্চ কয়েকজন মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত সকলের জন্য সাহায্য চাইতে। কিন্তু সেখানকার দায়িত্বরতরা তাদের কথায় কোনো ভ্রুক্ষেপ করেন নি।

দৈনিক মজুরি ভিত্তিক অস্থায়ী আরো ৩ জন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেলো একই চিত্র। সবার ঘরেই ইতোমধ্যে জরুরী খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে৷ সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে এই চিন্তাতেই দিশেহারা সবাই।

তবে ভ্রুক্ষেপ করা হয় নি বলে অভিযোগটি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার ড. মুহম্মদ মুহসিন উদ্দিন। তিনি বলেন, ” আইনী বিধিনিষেধের ফলে প্রশাসনিক জায়গা থেকে তাদের পাশে দাঁড়াবার সুযোগ নেই। তবে মানবিক জায়গা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলে তাদের জন্য কিছু করার পদক্ষেপ নিয়েছে৷ দ্রুতই তাদের পাশে দাঁড়ানো হবে “।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net