নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন অসহায়, দুস্থ ও সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন।বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নির্দেশে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া খাদ্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচির মাধ্যমে এ পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে ৬ হাজারের অধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়া হয়েছে।যারমধ্যে সোমবার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক কলোনীর (কেডিসি বস্তি) কর্মহীন ১ হাজার ২শ মানুষের ঘরে, দ্বিতীয় দিন মঙ্গল স্টেডিয়াম কলোনীর (চাঁদমারি বস্তি) ১ হাজার ৩ শত, বুধবার নগরীর রসুলপুর কলোনীর দেড় হাজার মানুষের ঘরে এবং বুহস্পতিবার নগরীর শিশুপার্ক কলোনী, কলাপট্টি, কসাইখানা ও পলাশপুর কলোনীর ২১শত পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী পৌছে দেয়া হয়েছে।
যেখানে প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে শুরু করে বিত্তবান মানুষ এবং বিভিন্ন সংগঠন একত্রীত হয়ে অসহায় কর্মহীন মানুষের পাশে এসে দাড়াচ্ছে। সেখানে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কোনো ভূমিকা না থাকায় হতাশ ওয়ার্ডের সাধারন বাসিন্দারা। দেশের এই পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান দুলালের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকাবাসীর মাঝে।
সমগ্র বিশ্ব যখন এই ভাইরাস নিয়ে চিন্তিত,তখন স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধির নেই কোন ধরনের উদ্যোগ। এমন অবস্থায় এক ধরনের আতংকের মধ্যে জীবন যাপন করছেন কয়েক হাজার পরিবার। ২২ নং ওয়ার্ড মদিনা মসজিদ এলাকার এক ভাড়াটিয়া যিনি প্রায় ৩/৪ বছর যাবত ২২ নং ওয়ার্ডে ভাড়া থাকছেন,এমনিই এক ভাড়াটিয়া কাউন্সিলর ত্রান-সাহায্য দিবে এমন কথা শুনে ত্রাণ লিস্টে নাম লিখাতে গেলে তাকে কাউন্সিলরের ত্রাণ বিতরণ প্রতিনিধি স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ আশরাফ আলী (আড়াই) এবং মোঃ মোনায়েম হোসেন জিজ্ঞাসা করেন আপনি কি এই ওয়ার্ডের ভোটার? যদি আপনি এই ওয়ার্ডের ভোটার হন তাহলে ভোটার আইডি কার্ড দিন নয়তো লিস্টে নাম নেয়া যাবেনা।
পরবর্তীতে হতভাগা সেই ভাড়াটিয়া ভোটার আইডি কার্ড না দিতে পেরে সকলের সামনে অনেক কস্ট মনে নিয়ে নীরবে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়ে কাউন্সিলরের পক্ষে ত্রাণ বিতরণ করার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ আশরাফ আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান,২২নং ওয়ার্ডের আমরা যারা একটু বিত্তবান রয়েছি তাদের সকলের সহযোগিতায় এবং কাউন্সিলরের তত্বাবধায়নে আমরা সকলে মিলে অসহায় গরিবদের পাশে থাকার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে কাউন্সিলরের নির্দেশনা মোতাবেক যারা এই ওয়ার্ডের ভোটার আমরা শুধু তাদের মাঝেই সাহায্য বিতরণ করবো।
স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান, জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর তার কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি এবং সারা বছরেও তিনি এলাকাবাসীর কোন খোঁজ খবর নিতেও তার দেখা মেলেনি। তার এই ধরনের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা নিয়ে এলাকায় তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় কয়েক হাজার পরিবার রয়েছে যারা দারিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ। দিন আনে দিন খায় এইসকল পরিবার একদিকে যেমন গৃহবন্দী হয়ে আছেন অন্যদিকে দেখা দিচ্ছে চরম খাদ্য সঙ্কট।এইসকল অসহায় মানুষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির থেকে পাচ্ছেন না কোন ধরনের সাহায্য ও সহোযোগিতা এমন অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে জীবন যাপন করছে ওয়ার্ডের অনেক পরিবার।দেশের পরিস্থিতি যদি এমনভাবে চলমান থাকে তবে তাহলে হয়তো করোনা ভাইরাস নয় না খেতে পেরেই মারা যাবেন তারা।
এ বিষয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান দুলাল জানান,সিটি কর্পোরেশন থেকে এখন পর্যন্ত কোন সাহায্য সহযোগিতা আসেনি। তাছাড়া আমি আমার নিজ অর্থায়নে ৫২০ জনকে সাহায্য দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আমার এলাকার ভোটার ছাড়া ২২ নং ওয়ার্ডের কোনো ভাড়াটিয়া হলেও তাদের কাউকে এই সাহায্য প্রদান করা হবেনা বলে স্রেফ জানিয়ে দিলেন এই কাউন্সিলর।
সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশনের হিসেবে করোনা পরিস্থিতির কারণে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের অন্তত ৪০ হাজার মানুষ বর্তমানে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। অসহায় এই মানুষের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তার নির্দেশনা ও সরাসরি তত্বাবধানে সোমবার থেকে এই খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মেয়রের নেয়া এ পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নগরজুড়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। সন্কটকালীন এই সময়টাতে খাদ্য সহায়তা পেয়ে সকলে মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় জনগনের নিরাপদে ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে এসব খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে এবং যা বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নগরজুড়ে এ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে মেয়রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply