শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৮:৩৫

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
শেবামেকে করোনা সনাক্ত মেশিন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী-মেয়র ঠান্ডা লড়াই

শেবামেকে করোনা সনাক্ত মেশিন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী-মেয়র ঠান্ডা লড়াই

dynamic-sidebar

শাকিব বিপ্লব : অবশেষে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা সনাক্ত মেশিন এসে পৌঁছেছে। চলছে স্থাপন এবং ল্যাব প্রস্তুতির কাজ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সনাক্ত মেশিন দিয়ে রোগীর রোগ নির্ণয় শুরু করতে পারবেন তারা।

এদিকে মেশিনটি কার সুপারিশে শেবাচিমে এসেছে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতা পরস্পরবিরোধী দাবী তুলেছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমকে মেশিনটি স্থাপনে শেবাচিম চিকিৎসকদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করতে দেখা গেলেও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে এক্ষেত্রে অনুপস্থিত দেখা যায়।

তবে তার অনুসারীরা বলছেন এই নেতার শক্ত সুপারিশেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুততার সাথে দুর্লভ করোনা সনাক্ত মেশিনটি শেবাচিমের জন্য বরাদ্দ দেয়। অবশ্য দুই নেতার কেউই এ নিয়ে দাবীর স্বপক্ষে-বিপক্ষে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি।

কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অসীত ভূষণ দাস জানান, গত ৩০ মার্চ মেশিনটি শেবাচিমে এসে পৌঁছায়। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম এই হাসপাতালটিতে করোনা সনাক্তের মেশিনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং তত্ত্বাবধানে মেশিনটি শেবাচিমে আসে। এর দুইদিন পরেই ১ এপ্রিল মেশিনটি স্থাপনে প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বরিশালে এসেছেন।

এর আগ থেকেই কোথায় মেশিনটি স্থাপন করা হবে সে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল। শেবাচিম মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের করোনা সনাক্তের এই মেশিনটি স্থাপনে প্রকৌশলী ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। ১ এপ্রিল বুধবার সদর আসনের সাংসদ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল জাহিদ ফারুক শামীম শেবাচিমে যান এবং মেশিনটি যত দ্রুত সম্ভব স্থাপনের তাগিদ দেন।

এসময় শেবাচিমের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসকদের নিয়ে তিনি একটি সমন্বয় বৈঠক করেন। ঐ বৈঠকে প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন। এই প্রকৌশলী আশ্বস্ত করেছেন চলতি সপ্তাহের মধ্যেই স্থাপনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ল্যাবটি আধুনিকায়নের কাজও সম্পন্ন হবে।

অধ্যক্ষ ডাঃ অসীত ভূষণ দাস জানান, তারাও একই আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। বরিশালে করোনা সনাক্তের মেশিন আসলেও এ বিষয়ে এক্সপার্ট চিকিৎসক না থাকার প্রসঙ্গটি নিয়ে আলাপচারিতায় এই অধ্যক্ষ জানান, আগত প্রকৌশলীরাই শেবাচিম চিকিৎসকদের মধ্য থেকেই বিশেষ কয়েকজনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হবে।

তিনিও জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অধিদপ্তর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মেশিন প্রেরণ ও স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবেই কাজ চলছে। মেশিন নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের কারো ভূমিকা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকেই বিষয়টি অনুমোদন পেয়েছে। মেশিন স্থাপন নিয়ে শুরু থেকেই প্রতিমন্ত্রীকে তোড়জোড় করতে দেখা যায়। এ দুর্যোগ নিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি এবং শেবাচিমে সন্ধিদ্ধ ভর্তি রোগীরা করোনা আক্রান্ত কিনা তা নিয়ে বিতর্ক দেখা যায়।

সূত্র জানায়, এর পরিপ্রেক্ষিতেই জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও শেবাচিম হাসপাতাল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথকভাবে মেশিনটি স্থাপনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেই কলা হয় দেশের প্রতিটি বিভাগে করোনা পরীক্ষার যন্ত্র স্থাপন করা হবে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এ নিয়ে বৈঠকেও করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী।

এদিকে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর রাজনৈতিক অনুসারী এবং তার প্রতি মতাদর্শের চিকিৎসকদের একটি অংশের দাবী মেশিন আসার পর এই নেতা নিরব থাকলেও মেশিনটি বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে তার অবদানই বেশি। তিনি এবং তার পিতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে জোড় তদ্বির চালান।

উল্লেখ্য, শেবাচিমের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মন্ত্রী পদমর্যার আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্কে প্রকাশ্য কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। সাদিক আবদুল্লাহ্ বেশ কয়েকবার মিডিয়ার কাছে মেশিনটি আমদানির গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন। তার ঘনিষ্টজনদের দাবী করোনা ভাইরাস নিয়ে সন্দিহান হওয়ায় মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ্ নিজ ঘরে হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন কাটিয়ে এখন শারীরিক অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছেন। এ কারণে শেবাচিমের করোনা মেশিন নিয়ে কোন কার্যক্রমে তিনি অংশ নিতে ইচ্ছা স্বত্ত্বেও অনুপস্থিত থাকতে হচ্ছে।

অবশ্য মেশিন আমদানি নিয়ে বিতর্কের প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর সরাসরি মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পক্ষান্তরে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল খান মামুন বলেন, তার নেতাই বরিশালে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাবী উপস্থাপন করে যুক্তির আলোকে বরাদ্দ অনুমোদন করান।

উদাহরণ টেনে এই নেতা জানান, মেশিনটি স্থাপন নিয়ে এ যাবত যত বৈঠক হয়েছে সবক্ষেত্রেই প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষ বুধবার তিনি শেবাচিমে গিয়ে মেশিনটির কার্যক্রম দ্রুত শুরুর তাগিদ দিয়ে স্থাপনা কাজের তদারকি করেন।

শেবাচিম হাসপাতাল ঘুরে আভাস পাওয়া গেছে মেশিন বরাদ্দের ক্ষেত্রে ভ’মিকা রাখার প্রশংসা নিয়ে পরস্পরবিরোধী সাংঘর্ষিক মন্তব্যে ও কর্মকর্তারা বিব্রত। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, করোনা মেশিন নিয়ে লড়াইয়ে কে জেতে তার চেয়ে বড় বিষয় এই দুই শীর্ষনেতার কেউই এই দুর্যোগকালীন সময়ে প্রকাশ্যে জনতার পাশে আসেননি। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং সুশীল সমাজেও।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net