শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৪:২৬

শিরোনাম :
রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল দুই উৎসবের ছুটি শেষে বরিশাল থেকে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ ঈদ আনন্দ থাকতেই বরিশালে বইছে পহেলা বৈশাখের আনন্দ
ত্রাণ দিতে স্বদিচ্ছা সত্যেও আরেফিন মোল্লা ও সালাউদ্দিনের বরিশালের পথরুদ্ধ

ত্রাণ দিতে স্বদিচ্ছা সত্যেও আরেফিন মোল্লা ও সালাউদ্দিনের বরিশালের পথরুদ্ধ

dynamic-sidebar

অতিথি প্রতিবেদক :করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লগডাউনের আওতায় থাকা বরিশাল নগরীর নিম্নশ্রেণির মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী দিতে স্বউদ্যোগী হয়েও বরিশালে আসতে পারছেন না ভোটের রাজনীতিতে আলোচিত আরেফিন মোল্লা ও সালাউদ্দিন রিপন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এই দুই নেতা গোটা বরিশালে দরিদ্র শ্রেণির সহায়তা ও সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে তুমুল আলোচনায় আসেন। সেই চিত্রপট থেকে উভয় নেতাকে করোনা ভাইরাস দুর্যোগে বরিশালে উপস্থিতি বৃহৎ একটি অংশের কাম্য ছিল। ত্রাণসামগ্রী দিতে উভয় নেতা প্রস্তুতিও নিয়েছিল।

কিন্তু একটি মহলবিশেষ বরিশাল রাজনীতিতে তাদের যাতায়াত সহজভাবে নিতে না পারায় আক্রোশের মুখে রয়েছেন, এমন অভিযোগ তাদের অনুসারীদের। উভয় নেতা আসতে না পারলে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে কৌশলী পথে অগ্রসর হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তাদের ঘনিষ্টজনেরা। অবশ্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সালাউদ্দিন রিপনের পক্ষ থেকে সদর উপজেলার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে চাল ও ডাল পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। তার ঘনিষ্ট একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায় গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয়ভাবে খাদ্যসামগ্রী সাজানো হচ্ছিল বিতরণ উপলক্ষে।

এ কার্যক্রম বেগবান করার নির্দেশ দিলেও সালাউদ্দিন রিপন নিজে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি কেন অনুপস্থিত নিয়ে নিজ এলাকা চরবাড়িয়ায় আলোচনার সূত্রপাত ঘটে। এরপরই বিভিন্ন সূত্র বলছে নিজ ঘরোনার রাজনীতির ঘোরাটোপে পড়ে সামাজিক ব্যক্তিত্ব সালাউদ্দিন রিপন এখন অনেকটা কোনঠাসা। সরকারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এমন একজন ব্যক্তি, যিনি কিনা সালাউদ্দিন রিপনকে কোনভাবেই মানতে পারছেন না। বিশেষ কিছু ইস্যু নিয়ে তার সাথে মতোবিরোধ তুঙ্গে উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন রিপন গণমাধ্যমকে বলেন, শত ইচ্ছা থাকা সত্বেও এই দুর্যোগে নিজ এলাকায় যেতে না পারাটা দুঃখজনক। তিনি ব্যবসায়ীক কাজে বেশ কিছুদিন ভারতে অবস্থান শেষে দেশে ফেরায় কোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এখন শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন। এ অবস্থায় বরিশালে না গিয়ে তার অনুসারীদের মাঠে নামিয়ে দেয়ার উদ্যোগের কথা জানান। তবে এই প্রতিবেদকের সাথে করোনা ইস্যু ও বরিশাল প্রসঙ্গে নিয়ে আলাপচারিতায় তার কণ্ঠে এক ধরণের রাজনৈতিক আত্মঘাতী ভীতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তবে তার ঘনিষ্ট একাধিক সূত্র এমন তথ্যের সাথে অভিন্নতা প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতার রাজনীতি করেও নিজ ঘরে আসায় অঘোষিত যেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সালাউদ্দিন রিপনকে উদ্দেশ্য করে।

অনুরূপ আক্রশ বা কোপানলের মুখে রয়েছেন আরেক নেতা আরেফিন মোল্লা। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক এই নেতা গত নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারণা এবং সামাজিক কর্মকান্ডে আলোড়ন তুলেছিলেন। তরুণ এ রাজনৈতিক পদ প্রত্যাশীর অনুসারীরাও চেয়েছিল তিনি বরিশালে আসুক এবং করোনা ভাইরাস নিয়ে গণসচেতনতায় রাজপথে নামুক।

সূত্র জানায়, তেমনটি ইচ্ছাও ছিল। কিন্তু নিজ ঘরোনার রাজনীতিতে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বরিশালে যেতে তিনি এখন অতটা আগ্রহী নন। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে শীর্ষ জনৈক এক রাজনৈতিক ব্যক্তির সাথে তার মানসিক শীতল লড়াই চললেও অনেকেই তা জানেন না। তিনি বরিশালে অবস্থানকালে সতর্ক পথ অবলম্বন করে চলাফেরা করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, জাগুয়া-নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা আরেফিন মোল্লা যেমন সাহসী তেমনি উন্নয়ন কাজে দূরদর্শীও বটে।

তাছাড়া তার চলনবলন অনেকটা চলচ্চিতের অনুকরণ বটে। যার কারণে বিশেষ একটি মহলের কাছে তিনি ঈর্শ্বার কারণ হয়ে দাড়িয়ে বলে এমন মন্তব্য পাওয়া যায়। যা বিশেষ একটি যে কিনা ভোটের রাজনীতিতে মানুষকে আন্দোলিত করেছিল সেই আরেফিন মোল্লাও করোনা দুর্যোগে বরিশালে থাকবেন এমন প্রত্যাশা ছিল অনেক প্রাপ্তির প্রতীক্ষায় থাকা একটি বৃহৎ অংশের মানুষের। তার ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, করোনা ইস্যু নিয়ে বরিশাল প্রেক্ষাপট ভাবনায় এনে করণীয় কী আছে তা নিয়ে ভাবলেও বরিশালে যেতে তিনি আগ্রহী নন। বরং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিবেন। তিনি চাননা সাংঘর্ষিক কোন পরিস্থিতি তৈরি হোক।

এ প্রসঙ্গে আরেফিন মোল্লার সাথে এই প্রতিবেদকের দীর্ঘ আলাপচারিতায় ভীতির রাজনীতির শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এগুলো অবান্তর। যার যার অবস্থান তার তার কাছে। কেউই নিজ ঘরে ভিন্ন নয় এমন মন্তব্য করে হাসির সুরে বলেন, কে কার পথ আটকায়। তার দাবী সরকার, স্থানীয় সাংসদ এবং মেয়র এ বিষয়ে মাঠে ভ’মিকা রাখছেন। যা যথেষ্ট। এমতঅবস্থায় তার প্রয়োজন হলে তিনি সহায়তায় এগিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছেন।

কিন্তু কেন তিনি বরিশালে উপস্থিত থেকে স্বউদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ বা গণসচেতনতায় ভূমিকা রাখছেন না বা রাখার ইচ্ছাও দেখা যাচ্ছে না, এমন প্রশ্নের প্রতিউত্তরে ভাষ্য হচ্ছে, তার নেতারা মাঠে রয়েছেন। তবে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিতে তিনি স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। কোন ভীতির কারণে এই মুহূর্তে দুর্যোগের বরিশালে তিনি অনুপস্থিত কিনা, সেই প্রশ্নটি তিনি কোনভাবেই মানতে নারাজ। তার সোজাসাপটা বক্তব্য হচ্ছে, নেত্রীর রাজনীতি করেন, আর স্থানীয়ভাবে নেতাদের সমীহ করেন। কাউকে ভয় পেয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে সমসাময়িককালে তাকে না দেখা যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুললে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন ভয়ের সীমানা কতদূর? যা অতিক্রম করা যাবে না। তিনি নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র প্রশংসা করে তার দিক নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও ইঙ্গিত দেন।

এদিকে বরিশালে গত বেশ কয়েকদিন ধরে সিটি মেয়রকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির মাঝে রাজনৈতিক দাতা হিসেবে পরিচিত সালাউদ্দিন রিপন ও আরেফিন মোল্লা কেন বরিশালে অনুপস্থিত সেই প্রশ্নটিও ঘুরপাক খাচ্ছিল। উৎসাহী হয়ে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করলে উভয় নেতা বা এই সামাজিক ব্যক্তিদ্বয়ের বরিশালে উন্নয়ন কাজে অগ্রসর হতে একটি মহলের বাঁধার মুখে রয়েছেন। যদিও দুই নেতা এই তথ্য অস্বীকার করলেও তাদের কণ্ঠস্বরে আকার ইঙ্গিতে বরিশালে ক্ষমতাসীন দলীয় রাজনীতিতে উভয়ে রয়েছেন কারো তোপের মুখে। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি, তা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। শুধু বলছে দুই নেতার সামাজিক কর্মকান্ডের কাছে ক্ষমতাসীন দলের অনেক দায়িত্বশীল নেতা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। সেখান থেকেই শীতল লড়াইয়ের সূত্রপাত।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net