নিজস্ব প্রতিতবেদকঃ ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে মামলায় জর্জরিত বরিশাল সদর উপজেলার কড়াপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর ফের মামলা হয়েছে। প্রায় দেড় বছরে চারটি মামলার বেড়াজালে বিদ্যালয়টিতে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন পলাশ জানান, দুই বছরের ব্যবধানে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৮শ’ থেকে বর্তমানে সাড়ে ৩শ’ জনে নেমে এসেছে। যা অত্র এলাকার জন্য অশুভ সংকেত। অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক টাকার অভাবে সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ রেখেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, নতুন কমিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে প্রধান শিক্ষকের নিকটাত্মীয়দের দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের মামলা করানো হয়েছে। তিনি বলেন এ সংশ্লিষ্ট জাল-জালিয়াতির কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। জালিয়াতির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করবেন বলে জানান।
গত ২০ অক্টোবর দায়েরকৃত মামলায় ১নং বাদী মোখলেছুর রহমান প্রধান শিক্ষকের ভাই এবং এই বাদীর মেয়ে মুনমুন আকতার এয়ার পোর্ট থানাধীন মাধবপাশা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যার জেএসসি রেজি নং ১৯১৫৪৫১৯০০। অথচ বাদী মোখলেছ নিজেকে অভিভাবক সদস্য উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। একই মামলার ২নং বাদী কবির হোসেন ফকির প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিনের বেয়াই। তার ছেলে নগরীর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীর গ্যালাক্সি শাখার ২২ রোলে অধ্যয়নরত থাকলেও পপুলার স্কুলের ছাত্র দেখিয়ে অভিভাবক সদস্য হয়েছে এই বাদী। ৩নং বাদী শাহনাজ বেগম আপন মামাত বোন। কিন্তু তার স্বামী মাহফুজ আকন অভিভাবক সদস্য থাকার পরও সে অভিভাবক সদস্য হওয়ার জন্য মামলা করেছে। অপরদিকে বর্তমান কমিটিতে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে সভাপতি আনিসুর রহমান দুলাল প্রধান শিক্ষক ফরিদের চাচাত ভাই ও ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, অভিভাবক সদস্য মোঃ মাসুম শরীফও ফুফাত ভাই, শিক্ষক প্রতিনিধি আপন ছোট চাচী, মহিলা অভিভাবক সংরক্ষিত সদস্য মামাত বোন।
সম্প্রতি দায়ের হওয়া ১ম যুগ্ম জজ আদালতে দায়েরকৃত মামলায় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনজন অভিভাবক সদস্য। ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বকারীরা জানান, ২০১৮ সালে অবৈধ ভাবে কমিটি গঠন উল্লেখ করে ঐতিহ্যবাহী কড়াপুর পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোঃ সাইদুল ইসলাম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন।
ঐ অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে পৃথক দু’টি স্মারকে কড়াপুর পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি বাতিল করেন এবং মাউশিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন ও তার সহযোগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তকে স্থগিত রাতে। ঐ কমিটির অভিভাবক সদস্য মাসুম শরীফ জানান, তিনি নিজেই জানেন না কিভাবে এ পদে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আরো জানান, পূর্বের কমিটি বাৎসরকি ধার্য্যকৃত ২৮শ’ টাকার স্থলে মামলা করে টিকে থাকা বর্তমান কমিটি প্রায় ৭ হাজার টাকা আদায় করছে।
পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের সরকারি বই বিক্রয়, বিদ্যালয় মাঠে মাছ চাষ, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরন সহ নানান ঘটনায় ঝাড়ু মিছিল, মানববন্ধন সহ নানান ঘটনায় পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন তফসিল ঘোষনার পর মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান। এ বিষয়ে অন্যান্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
বরিশাল শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউনুস জানান, কোন বিষয়ে মামলা হলে আমাদের তেমন কিছু করার থাকেনা তখন আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আমরা বাধ্য হই।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply