শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:১৫

বরিশাল শেবাচিম হাঁসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা বাবার লাশ আটকে পুলিশ ছেলেকে পেটালেন চিকিৎসক!

বরিশাল শেবাচিম হাঁসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা বাবার লাশ আটকে পুলিশ ছেলেকে পেটালেন চিকিৎসক!

dynamic-sidebar

স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে শাহজাহান খান (৬৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধার বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ তোলায় ওই ব্যক্তির পুলিশ ছেলেকে মারধর করে পুলিশেই সোপর্দ করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।

এঘটনায় মৃত বাবার লাশ আটকে রাখা হয়েছিল বলে জানান পুলিশ ছেলে মো. আসলাম। বাকেরগঞ্জ উপজেলার সঠিখোলা গ্রামে আসলামের গ্রামের বাড়ি। তিনি বলেন, বাবা (শাহজাহান) দীর্ঘদিন লিভার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্যে শেবাচিম হাসপাতালে আনা হয়। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকটা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা। কিন্তু বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের রুমে কোন চিকিৎসক ছিলেন না। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তার বাবার মৃত্যু হয়।

আসলাম অভিযোগ করেন, চিকিৎসকদের অবহেলায়ই তার মুক্তিযোদ্ধা বাবার মৃত্যু হয়েছে। পরে আসলামকে মিথ্যা সান্ত¦না দেয়ার লক্ষ্যে তার মৃত বাবার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে রাখেন অভিযুক্ত চিকিৎসকরা। ততক্ষণে আসলাম বুঝতে পারেন তার বাবা আর বেঁচে নেই। এ সময় আসলামের সঙ্গে চিকিৎসকদের তর্ক-বিতর্ক হয়। এই ঘটনায় আসলাম ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায় হাসপাতালের এইচএমও চিকিৎসক ইফাদ ও শিক্ষানবীশ চিকিৎসক সজল আসলামকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে নার্সদের রুমেও আসলামকে আটকে রাখা হয়। এমন খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক। তিনিও আসলামের বাবার লাশ হাসপাতালে আটকে রাখার নির্দেশ দেন।

আসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে না বলে উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।

এমনকি উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক উল্টো অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে বলেন, ওরে (আসলাম) ক্ষমা না করে পুলিশে সোপর্দ করা হোক। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে আসলাম ক্ষমা চেয়ে বাবার লাশ ফেরত নিতে চাইলেও লাশ দেয়া হয়নি। সর্বশেষ হাসপাতালে দায়িত্বরত বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আসলামের বাবা মারা গেলেও সকাল ১১টায় তার লাশ ফেরত দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আসলামের সকল অভিযোগ মিথ্যা। আসলামের বাবা মারা যাওয়ায় তিনি উত্তেজিত হয়ে কর্তব্যরত শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের টেবিলে হাত চাপড়ে কথা বলেন। এ সময় আমি তাকে বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হই। পরে আসলাম তার বাবার লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান।

হাসপাতাল পুলিশের এসআই নাজমুল হুদা জানান, আমি অসুস্থ হওয়ার কারণে বাসায় বিশ্রামে ছিলাম। তারপরও আমার ব্যবহৃত মুঠোফোনে বিষয়টি অনেকে জানিয়েছেন। তবে সম্পূর্ণ ঘটনা আমার জানা নেই।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net