শামীম আহমেদ ॥ প্রয়াত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনায় নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে দুইদিনব্যাপী উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি উৎসব শনিবার (২৬ই) অক্টোবর বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে ২টা ৩২ মিনিট দিবা সময়ে থেকে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দীপাবলি উৎসবে প্রিয়জনের আত্মার শান্তির কামনার জন্য প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিশ্বের বিভিন্নস্থান থেকে স্বজনরা এখানে ছুটে এসেছেন। ফলে মহাশ্মশান এলাকা দেশ-বিদেশের মানুষের পদচারণায় এখন মুখর হয়ে উঠেছে।
সূত্রমতে, প্রতি বছরের মতো এবারও ভূত চতুর্দ্দশীর শনিবার দিবা ২ টা ৩২ মিনিটে পুণ্যতিথিতে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী শ্মশান দিপালী উৎসব শেষ হবে রবিবার ১২টা ১৪ মিনিটে। এরপর (২৭ই) অক্টোবর রবিার রাত্রি ১২টা ১ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে শ্মশান কালীপূজা ও প্রসাদ বিতরন। প্রায় ২০২ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবকে ঘিরে তোরণ নির্মাণসহ ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ২০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। পুরো উৎসব নির্বিঘœ করতে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সূত্রে আরও জানা গেছে, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় ২০২ বছর পূর্বে ৫ একর ৯৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় মহাশ্মশান। এ শ্মশানে ৩০ হাজার পাকাসহ মোট সমাধি রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। প্রয়াতদের স্বজন যারা বরিশালসহ সারাদেশে তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছেন তারা এইদিনে সমাধির পাশে এসে তাদের আত্মার শান্তির কামনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে প্রার্থনা করেন। কেউ পাঠ করেন গীতা। প্রার্থনা করে অনেক স্বজন প্রয়াতের জন্য কান্নায় ভেঙে পরেন। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও এসেছে প্রিয় প্রয়াতের জন্য প্রার্থনা করতে। শনিবার সন্ধারাত থেকে সারা রাত মোমবাতির আলোয় আলোকোজ্জ্বল হয়ে ওঠে পুরো শ্মশান এলাকা।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুডু বলেন, দিপালী উৎসবে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ভারত, নেপালসহ উপমহাদেশ এবং বাহিরের অনেক দেশ থেকে প্রচুর লোকের সমাগম হওয়ায় র্যাব ও পুলিশসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ও নজরদারী জোরদার করা হয়েছে। অপরদিকে দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে মহাশ্মশানের একপাশে দুইদিনের মেলা বসেছে। মেলায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সস্প্রতি এ শ্মশানে ভারত থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের সমাধী। এছাড়া বিপ্লবী দেবেন্দ্র নাথ ঘোষ, মনোরমা মাসিমাসহ অবিভক্ত বাংলার অনেক গুণী ব্যক্তির সমাধি রয়েছে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী শ্মশানে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সমাধিও রয়েছে এখানে। তাই বরিশালের বাইরের জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপালসহ অন্যান্য দেশ থেকে স্বজনরা আসবেন বরিশালের এই দীপাবলি উৎসবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply