শফিক মুন্সি ::
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সম্মুখে ১ ও ২৯ নং ওয়ার্ড আ.লীগের সম্মেলনের মাধ্যমেই নগরের রাজনীতিতে বেজেছে পরিবর্তনের দামামা।গতকাল রবিবার বেলা তিনটায় শুরু হওয়া সম্মেলনে ওয়ার্ড দুটির শীর্ষপদ প্রার্থীদের শো-ডাউন আর জনসংযোগে সম্মেলন স্থান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। তবে দুটি ওয়ার্ডের একটিতেও এখনও কমিটি ঘোষণা করা হয় নি। মহানগর আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সূত্র অবশ্য নিশ্চিত করেছে দু-একদিন পরপরই নতুন কমিটিগুলো ঘোষণা হবে, পাশাপাশি নভেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে শহরে সম্মেলনের ধারাবাহিকতা।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে ২১ তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। নগরীর সার্কিট হাউজে সম্পন্ন হওয়া সভাটি ছিল বরিশালের আওয়ামী নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আগামী দিনে এ অঞ্চলে আওয়ামী রাজনীতির গতিপথ সম্পর্কে ইঙ্গিত পেয়ে গেছে সবাই। সভাপতির বক্তব্যে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন দলের দুঃসময়ের কর্মীদের নিয়েই শুরু হবে ভবিষ্যৎ যাত্রা। তাঁর কথায় নতুন করে উজ্জীবিত হতে দেখা গিয়েছে রাজনীতি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া আওয়ামীলীগের পুরনো নেতাকর্মীদের।
এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেলো ওয়ার্ড পর্যায়ে আ.লীগের সম্মেলন। গতকাল ১ ও ২৯ নং ওয়ার্ডের সম্মেলনের মাধ্যমে সূচনা করা হয় নগরীর আওয়ামী রাজনীতির পালাবদলের। এরই সাথে ঠিক হয়ে গেছে বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ। আগামী ৭ ই ডিসেম্বর বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ৮ ই ডিসেম্বর হবে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের আগে ১০ টি উপজেলা, ৫ টি পৌরসভা ও উপজেলার ইউনিয়ন গুলোতে সম্মেলন আয়োজন করা হবে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবারের সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা বলেন, দলে অনুপ্রবেশকারী, মাদক ও দুর্নীতিবাজসহ বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়েই আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর এই বক্তব্য অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনায় থাকা অনেক আওয়ামী নেতাকর্মী এবার ছিটকে পড়তে পারে মহানগর ও জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি থেকে।
বর্ধিত সভার বিভিন্ন ব্যাপারে কথা হয়েছিল সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ রুবিনা আক্তার মিরার সঙ্গে। তিনি জানান, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নতুন সম্মেলন ঘিরে যে উৎসবের সৃষ্টি হয়েছে সেটার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে দলের পোড় খাওয়া নেতৃবৃন্দ। আমাদের দলীয় সভানেত্রীর পরিস্কার নির্দেশনা হচ্ছে ত্যাগীদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের অভিভাবক আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর হাত ধরে বরিশালেও এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হবে।
নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে খোঁজ খবর নেওয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ও মহানগরের বর্তমান শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি এড.গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল জানালেন, সৎ, ত্যাগী এবং মৌলবাদী সংস্পর্শ মুক্ত প্রার্থীদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে তৃণমূল আওয়ামীলীগের ভার৷
ওয়ার্ড সম্মেলনের প্রথম দিনে কথা হয়েছে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড.এ কে এম জাহাঙ্গীর এর সঙ্গেও। তৃণমূলে সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ – উদ্দীপনার কথা জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, কর্মীদের খুব একটা অপেক্ষা করে থাকতে হবে না সুখবরের জন্য। প্রতিটা সম্মেলনের দু-একদিনের মধ্যেই নতুন কমিটি প্রকাশ করা হবে৷
অন্যদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড.তালুকদার মোঃ ইউনুস জানালেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং অনুপ্রবেশ করে যারা দলের ক্ষতি করেছে তাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেছে তারা নেতৃত্বের দৌড় থেকে ছিটকে পড়বেন৷
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply