শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ভোর ৫:১৬

ঝালকাঠিতে ঝুঁকি ভাতা নিয়ে ঝুকির মুখে গ্রাহকরা

ঝালকাঠিতে ঝুঁকি ভাতা নিয়ে ঝুকির মুখে গ্রাহকরা

dynamic-sidebar

ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ঝালকাঠিতে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারী সংগঠন ঝুঁকি ভাতার নামে শত শত মানুষের কাছ থেকে নেয়া ৫শ টাকা হারে সঞ্চয় উল্টো ঝুকির মুখে ফেলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার দরিদ্র, খেটে খাওয়া ও স্বল্পপুঁজির মানুষকে তাদের সদস্যভূক্ত করে অবৈধ সঞ্চয় গ্রহন ও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নামে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে সদস্য করে এ ঝুঁকিপূর্ণ আর্থিক কার্যক্রম চালালেও এই জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন সম্পর্কে এনজিও বিষয়ক জেলা কমিটি, জেলা সমাজসেবা অফিস বা স্থানীয় প্রশাসন আদৌ অবগত নয় বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে সরেজমিন ঝালকাঠি শাখা ব্যবস্থাপক সাথে আলাপকালে প্রদানকৃত কাগজপত্রে দেখা যায়, ১৯৭৭ সালে যশোর জেলা সমাজসেবা কার্যালয় হতে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন অনুমোদন নিয়ে (রেজি: নং ১৭৩/৭৭) তাদের কার্যক্রম শুরু করে এই সংস্থাটি। কিন্তু এই রেজিষ্ট্রেশনের হাল নাগাদ কোন তথ্য উপাত্ত ঝালকাঠি অফিস উপস্থাপন করতে পারেনি। তাছাড়া ঝালকাঠিতে তাদের কর্মকান্ডের বিষয়ে জেলা প্রশাসন বা সমাজসেবা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা সম্পর্কে কোন তথ্যপ্রমান তাদের কাছে পাওয়া যায়নি। এমনকি সরকারী বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী ‘কোন এনজিওর আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের যে অনুমোদন থাকতে হয় সেধরনের কোন অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে শাখা ব্যস্থাপক তারও কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি।

তবে ঝালকাঠি শাখা ব্যবস্থাপক বিপুল কুমার ঘোষ জানায়, সারা বাংলাদেশে ৪৮ টি জেলায় তাদের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালু রয়েছে দাবী করলেও দেশ ব্যাপি তাদের কার্যক্রমের স্বপক্ষে কোন তথ্যপ্রমান সংরক্ষিত নেই তার কাছে। এমনকি ঝালকাঠি জেলা জুড়ে শত শত সদস্যদের নিকট থেকে তারা যে ঝুঁকি ভাতা ৫শত টাকা হারে উত্তোলন করছে তারও কোন সঠিক হিসেব বা সংখ্যা জানাতে পারেনি সংস্থাটির এই শাখা ব্যবস্থাপক। এ অবস্থায় লাখ লাখ টাকা ঝুঁকিপূর্ণভাবে লেনদেনকারী এ সংস্থাটি যে কোন সময় জনগণের টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হতে পারে বলে আশংকা রয়েছে সচেতন মহলের।

জাগরণী চক্র ‘ঝুঁকি ভাতা’ নামে ঝালকাঠি শাখা অফিস কর্তৃক নেয়া সঞ্চয়ের টাকা স্থানীয় সদস্যদের মৃত্যুজনিত ও চিকিৎসা সংক্রান্ত খাতে ব্যয় করার কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এপর্যন্ত স্থানীয় ক’জন সদস্য তাদের কাছ থেকে কতো টাকা ‘ঝুঁকি ভাতা’ পেয়েছে তারও কোন সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই শাখা অফিসে। এছাড়া কোন নীতিমালা মানছে না সংস্থার ঝালকাঠি শাখা অফিসের ব্যবস্থাপক বিপুল কুমার ঘোষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সদস্য সাংবাদিকদের জানায়, শাখা ব্যবস্থাপক বিপুল বিশেষ সুবিধা গ্রহনের বিনিময়ে ঋণ প্রদান করেন, আর যারা সুবিধা দিতে না পারে তাদের ঋণ মেলেনা।

এ বিষয় ঝালকাঠি জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক স্বপন কুমার মুখার্জি সাংবাদিকদের জানান, “অভিযুক্ত জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন এর কার্যক্রম সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। তারা আমাদের কোন মাসিক বা বাৎসরিক প্রতিবেদন দেয় না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, ঝালকাঠি জেলায় সমাজসেবার নিবন্ধন নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। কিন্তু তারা এ নিয়ম মানছে না। তিনি এ ব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান ”

জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন”র ঝালকাঠি শাখা ব্যবস্থাপক বিপুল কুমার ঘোষ রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, “কাগজ পত্র না থাকলে সারা দেশে আমাদের কার্যক্রম চলে কেমনে? আমাদের সময় দেন আমরা ইমেইলে আপনাদের নিকট প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র পাঠিয়ে দেব। আমরা অনিয়ম কিছুই করছি না”। কিন্তু এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাল নাগাদ কোন কাগজপত্র তারা প্রেরণ করেন নাই।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net